যেন টাকার পাহাড়! ১১১ কোটি টাকা উদ্ধার পার্থ, অর্পিতা, মানিকের কাছে

যেন টাকার পাহাড়! ১১১ কোটি টাকা উদ্ধার পার্থ, অর্পিতা, মানিকের কাছে

কলকাতা: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বেঞ্চে ইডি রিপোর্ট দিয়ে নতুন মোড় এনে দিয়েছে শুক্রবার। নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়-অর্পিতা মুখোপাধ্যায়-মানিক ভট্টাচার্য তিনজনেই এখন জেলবন্দী। তবে ত্রয়ী সম্পত্তির রিপোর্ট কার্ড আদালতে পেশ করে নতুন জল্পনার উস্কে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ১১১ কোটি এখনও পর্যন্ত নগদ টাকা উদ্ধার এই তিনজনের থেকে।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই রিপোর্ট দেখে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ,’একাংশের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে। আসছে কোথা থেকে? এইসব নেতাদের ছুঁলেই কোটি কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। আর সাধারণ মানুষকে ছুঁয়ে দেখুন বাজারে তাদের কত দেনা আছে। এই জন্যই কি স্বাধীনতা সংগ্রামীরা জীবন দিয়েছিলেন? দেশের মালিক জনগণ। দুটো, চারটে, পাঁচটা ব্যবসা থাকলেই কেউ দেশের মালিক হয়ে যায় না। দেশের আসল মালিক তার জনগণ।’

শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণে আরও জানান, ‘সাধারন মানুষ ১০ হাজার টাকা উপার্জনের জন্য খেটে মরছে। আর অর্পিতা মুখোপাধ্যায়দের কাছে এত টাকা আসে কোথা থেকে?’ পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ইডি দেওয়া বিস্ফোরক রিপোর্টে বলা হয়েছে, তদন্ত চলাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা  মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ৪৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা নগদ এবং পাঁচ কোটি আট হাজার টাকা মূল্যের সোনার গয়না বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে  ৪৮ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে যা অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামে ছিল।

তদন্তে জানা গিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই সম্পত্তি গুলির মালিক ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সম্পত্তি অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এবং কিছু অস্তিত্বহীন ব্যক্তির নামে কিনে রেখেছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য একাই প্রায় ২৯ কোটি টাকার বেআইনি লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে আরও সাত কোটি ৯৩ লক্ষ টাকার সম্পত্তির হদিস পাওয়া যায়, যা মানিক ভট্টাচার্য এবং তাঁর পরিবারের নামে ছিল বলে ইডি হাইকোর্টে দাবি করেছে।

অভিযোগ, বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা নিয়মিত প্রায় ২৫০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে প্রাথমিক নিয়োগকে ঘিরে দুর্নীতির কারণে। নিয়োগ দুর্নীতির টাকা বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ও বিনিয়োগ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র নগদেই ১১১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে।

মামলাকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত, বিক্রম বন্দোপাধ্যায় এবং  ফিরদৌস সামিম জানান,’দুর্নীতির বহর যেভাবে প্রতিদিন প্রকাশ্যে আসছে তাতে যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল বাস্তবে তার দ্বিগুণ হতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে ইডি রিপোর্টে।’ ২৮ এপ্রিল মামলাটির পরবর্তী শুনানি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বেঞ্চে।

(Feed Source: news18.com)