মেইতেইদের তফসিলি জনজাতি গোষ্ঠীর মর্যাদা প্রদানের দাবি ঘিরে গত দু’দিন আগুন জ্বলেছে মণিপুরে। পুড়েছে ঘরবাড়ি, গাড়ি। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ঘরছাড়া হয়েছেন দুই সম্প্রদায়ের ৯,০০০-র বেশি মানুষ। আজ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা।
দু’দিনের হিংসার পর কিছুটা শান্ত হল মণিপুর। পুরো রাজ্যে এখনও চাপা উত্তেজনা থাকলেও শুক্রবার সকালে নতুন করে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন সংবেদনশীল এলাকায় ফ্ল্যাগমার্চ করছে সেনা এবং আধা-সামরিক বাহিনী। তারইমধ্যে শুক্রবার ভোররাত থেকে সেনা এবং আধা-সামরিক বাহিনীর নয়া কোম্পানি মোতায়েন করা শুরু হয়েছে। সেনার তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সেইসঙ্গে হিংসা-কবলিত এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধার করার কাজ এখনও চলছে। বিভিন্ন রাজ্যের তরফেও পদক্ষেপ করা হয়েছে। মেঘালয়ের মতো রাজ্যে চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের তফসিলি জনজাতি গোষ্ঠীর মর্যাদা প্রদানের দাবি ঘিরে গত দু’দিন আগুন জ্বলেছে মণিপুরে। পুড়েছে ঘরবাড়ি, গাড়ি, দোকান। একাধিক মন্দির, গির্জায় অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। শুধু বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ঘরছাড়া হয়েছেন দুই সম্প্রদায়ের ৯,০০০-র বেশি মানুষ। পরিস্থিতি এমনই হয় যে শর্তসাপেক্ষে দেখামাত্রই গুলি চালানোর নির্দেশ দেন রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকি। নামানো হয়েছে সেনা এবং আধা-সামরিক বাহিনী। বৃহস্পতিবার থেকে পাঁচদিনের জন্য পুরো রাজ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। অধিকাংশ জেলায় জারি করা হয়েছে কার্ফু।
হিংসা রুখতে মণিপুরে আরও আধা-সামরিক বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের অনুযায়ী, বিএসএফ ও সিআরপিএফ-সহ আরও ২০ কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনী হিংসা-কবলিত রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। আধা-সামরি বাহিনী মোতায়ের জন্য সিআরপিএফের ডিআইজি পদমর্যাদার পাঁচ অফিসার, কমান্ডান্ট পদমর্যাদার (এসএসপি) সাত কমান্ডার ও সেকেন্ড-ইন-কমান্ডকে (এসপি পদমর্যাদার) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা উত্তর-পূর্ব ভারতে সিআরপিএফের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেলের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ করছেন। কোনও কোনও অফিসারদের তড়িঘড়ি দিল্লি ও রাঁচি থেকে পাঠানো হয়েছে।
গুয়াহাটিতে জনসংযোগ আধিকারিক (প্রতিরক্ষা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দর রাওয়াত জানিয়েছেন, সেনা ও আধা-সামরিক বাহিনীর যে বাড়তি কলাম মোতায়েনের কাজ বৃহস্পতিবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে হিংসা-কবলিত এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধারের কাজ চলছে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাওয়াত বলেছেন, ‘সবপক্ষের সম্মিলিত প্রয়াসে মণিপুরের যে সব এলাকায় হিংসা ছড়িয়েছিল, সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অসমের দুটি এয়ারফিল্ড থেকে লাগাতার কাজ করে যাচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনার সি১৭ গ্লোবমাস্টার এবং এএন৩২ বিমান।’
(Feed Source: hindustantimes.com)