কলকাতা: ভারত কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। ইদানীং প্রায় সকলেই লাভের জন্য শস্যচক্র পরিবর্তনের কথা বলেছেন। কিন্তু কোন ফসল কৃষকদের জন্য লাভজনক হতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা আজও খুব কম মানুষেরই রয়েছে। রাজস্থানের ভরতপুর জেলার ভুসাভার শহরের বাসিন্দা আয়ুষ যাদব অবশ্য তুঁত চাষ নিয়ে কাজ করছেন। গোটা জেলায় তুঁত চাষের উদ্ভাবন নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি।
কৃষক আয়ুষ জানান, ঐতিহ্যবাহী চাষে ফলন কম হওয়ায় অনেক সময়ই আর্থিক ক্ষতি হয়। ছয় বছর আগে তাঁর এক সঙ্গীর পরামর্শে তিনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাঁচ শতাধিক তুঁত গাছের চারা বরাত দিয়ে আনান। তারপর প্রায় তিন হেক্টর জমিতে তুঁত চাষ শুরু করেন। এতে তাঁদের অনেক উপকার হয়েছে বলে তাঁর দাবি। তুঁত চাষ থেকে তার বার্ষিক আয় এখন প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা। এখন তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি দেখে আশপাশের কৃষকরাও এই চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
তুঁত চাষ থেকে বছরে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা আয়—
আয়ুষ যাদব জানান, তিনি কুড়ি বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু ওই ধরনের চাষের কাজে তেমন লাভ নেই। তাই কৃষিতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে পারতেন না। রোজগারের তাগিদে তাঁকে কৃষিকাজের পাশাপাশি কাপড়ের দোকানও চালাতে হত। সংসারে সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়তে থাকে দায়িত্বও। এই অবস্থায় কৃষির উপর নির্ভরশীল অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হতে শুরু করে।
আয়ুষের দাবি, সেই সময় তাঁর এক বন্ধুই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। পরিবারের অবস্থা ওই বন্ধুকে জানালে, তিনি আয়ুষকে তুঁত চাষের পরামর্শ দেন।
আয়ুষ বলেন, ‘ওই বন্ধুর সঙ্গেই আমি পশ্চিমবঙ্গে যাই। সেখান থেকে পাঁচশোরও বেশি তুঁত গাছের চারা নিয়ে আসি।’ সেই সব চারাই তিনি রোপণ করেন নিজের প্রায় তিন হেক্টর জমিতে। বছর তিনেক পর গাছে ফল আসে। স্থানীয় এলাকায় তো বটেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এর চাহিদা রয়েছে। এখন বছরে প্রায় ১৫-২০ লক্ষ টাকা আয় হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
তুঁতের উপকারিতা
তুঁত খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যকর। আয়ুর্বেদে এর উপকারিতার কথা বলা হয়েছে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে। চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করা হয়।