সেনা অফিসারের বাড়ি থেকে রাজপথ, ‘কাপ্তান’-র গ্রেফতারির প্রতিবাদে তুমুল অশান্তি পাকিস্তানে

সেনা অফিসারের বাড়ি থেকে রাজপথ, ‘কাপ্তান’-র গ্রেফতারির প্রতিবাদে তুমুল অশান্তি পাকিস্তানে

ইসলামাবাদ: জ্বলছে পাকিস্তান (Pakistan)। ইসলামাবাদ (Islamabad) তো বটেই, লাহৌর, মুলতান, ফয়সালাবাদ-সহ সে দেশের নানা প্রান্ত মঙ্গলবার ইমরান খান-সমর্থকদের (Imran Khan Supporters) প্রতিবাদ-বিক্ষোভে টালমাটাল। লাহৌর (Lahore) ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় এক সেনা অফিসারের বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ছুড়ল পাকিস্তান পুলিশ। ইসলামাবাদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষমেশ সে দেশের দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা জারি করতে হয়।

তুলকালাম পাকিস্তানে…
তীব্র আর্থিক অনটনে এমনিতেই পাকিস্তানের হাল অত্য়ন্ত খারাপ। তার উপর প্রাক্তন প্রধামন্ত্রীর গ্রেফতারিতে (Imran Khan Arrest) দেশজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তাঁর সমর্থকরা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদর দফতরেও ঢুকে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। পেশোয়ারেও ধুন্ধুমার বাঁধে পিটিআই-সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে। ইট-পাথরের টুকরো ধেয়ে আসে পুলিশের দিকে। জবাবে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। পাকিস্তানের সব ক’টি বড় শহরে কাতারে কাতারে মানুষের মিছিল। ইমরান খানের গ্রেফতারির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন তাঁরা। শুধু দেশ নয়, ইমরানের দল, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের লন্ডন শাখার তরফে জানানো হয়, দ্রুত সেখানে পাকিস্তান হাই কমিশনের সামনেও প্রতিবাদ দেখানো হবে।

‘কাপ্তান’-র গ্রেফতারি…
এদিন বিকেলে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীকে। অভিযোগ, তাঁর উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। তাঁর মাথায় ও পায়ে চোট লেগেছে বলেও খবর রটে। পরে জানা যায়, জখম ইমরান খানের চিকিৎসার জন্য ৭ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমের ফারুক এভাবে ইমরানের গ্রেফতারি নিয়ে আইজি-কে ভর্ৎসনা করেন। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার জমি কেলেঙ্কারির মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছে পাক রেঞ্জার্স।প্রধানমন্ত্রিত্বের পদ থেকে সরে যাওয়ার পর থেকেই, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান ইমরান খানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করে পুলিশ। এরই মধ্যে আল কাদির ট্রাস্টের জমি হস্তগত করার অভিযোগে, সম্প্রতি ইমরানের বিরুদ্ধে FIR দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার জামিন নিতে মঙ্গলবার সকালে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে গিয়েছিলেন তিনি। আদালত চত্বরেই তাঁকে গ্রেফতার করে রেঞ্জার্স বাহিনী। কার্যত টানতে টানতে গাড়িতে তোলা হয়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনের এই ঘটনাপ্রবাহের আগেই ইমরান খান বলেন, ‘পাক সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগে অটল রয়েছি। এই জন্য গ্রেফতার বা মৃত্যুবরণ করতেও রাজি।’ বস্তুত কয়েক মাস ধরেই প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর গ্রেফতারির জল্পনায় তপ্ত সে দেশের রাজনৈতিক পরিসর। একাধিক বার ইমরান খানের বাড়ির সামনে বিরাট পুলিশ বাহিনী জমায়েত হতে দেখা গিয়েছে। গত মার্চেই লাহৌরের জামান পার্কে ইমরানের বাড়ি ঘিরেছিল পুলিশ। সে সময় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হন, ১৫ জন পিটিআই সমর্থককে আটকও করে পুলিশ। গ্রেফতার হতে পারেন আঁচ করে, ইমরান সেই সময় দেশবাসীকে একটি ভিডিও বার্তা দেন। বলেন, ‘পুলিশ ভাবছে ইমরান খান জেলে চলে গেলে দেশের মানুষও ঘুমিয়ে পড়বেন। আপনাদের এই ভাবনাকেই ভুল প্রমাণিত করতে হবে। আপনাদের প্রমাণ করতে হবে যে এই দেশ হার মানবে না।’
এর পর কোন খাতে বইবে পাকিস্তানের রাজনীতি? ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে নাকি নতুন কোনও ধারা তৈরি করবে পাকিস্তান? বলবে সময়। তবে আপাতত অশান্ত পাকিস্তান।

(Feed Source: abplive.com)