জিতেও নেই শান্তি, কর্ণাটকে শুরু শিবকুমার বনাম সিদ্দারামাইয়া ‘দ্বন্দ্ব’

জিতেও নেই শান্তি, কর্ণাটকে শুরু শিবকুমার বনাম সিদ্দারামাইয়া ‘দ্বন্দ্ব’

একজনের বয়স ৭৫, একজনের ৬১। একজন ছাত্র অবস্থা থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত, অপরজন জেডিএস থেকে কংগ্রেসে এসেছেন। একজন কর্ণাটকের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, অপরজন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২৩ সালের কর্ণাটকে কংগ্রেসের বিশাল জয়ের পর এখন প্রশ্ন, এই দুই নেতার মধ্যে কে হবেন রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। আর এই আবহে এবার ডিকে শিবকুমার এবং সিদ্দারামাইয়ার সমর্থকদের মধ্যে ‘পোস্টার যুদ্ধ’ শুরু হল রবিবার সকাল থেকে। ১৯৯৯ সালের পর এই প্রথমবার কোনও দল দক্ষিণের এই রাজ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করছে। আর এরই সঙ্গে কংগ্রেসের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, মুখ্যমন্ত্রী কে? এই দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন সেরাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার। তিনি ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের। এবং ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের ভোটেই খেলা ঘুরেছে কর্ণাটকে। তবে হাল ছাড়তে নারাজ সিদ্দারামাইয়াও। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিদায়ী বিরোধী দলনেতা নিজের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে গদি ধরে রাখতে চান।

এদিকে গতকাল নির্বাচনে জয়ের পর দলীয় কর্মী এবং নেতাদের ধন্যবাজ জ্ঞাপনের সময়ও সিদ্দারামাইয়ার নাম নিয়েছিলেন শিবকুমার। তবে সিদ্দারামাইয়ার মুখে শোনা যায়নি শিবকুমারের নাম। এই আবহে আজ সকাল সকাল দুই নেতার বাসভবনের বাইরেই দেখা গেল দলীয় কর্মী-সমর্থকদের লাগানো পোস্টার। শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তোলা হয়েছে সেই পোস্টারে। এদিকে সিদ্দারামাইয়ার সমর্থকরাও সেই দাবি তুলে পোস্টার লাগিয়েছেন বেঙ্গালুরুতে। এমনিতেই রাজস্থানে সচিন পাইলট বনাম অশোক গেহলট এবং ছত্তিশগড়ে ভূপেশ বাঘেল বনাম টিএস সিং দেও দ্বন্দ্বে জর্জরিত কংগ্রেস। এই আবহে কর্ণাটকে নতুন এক দ্বন্দ্ব তৈরি হলে তা হাত শিবিরের কাছে ২৪-এর লড়াইয়ের আগে অস্বস্তিকর হবে।

প্রসঙ্গত, কর্ণাটকে এবারে ভোটে ভোক্কালিগা ভোট কংগ্রেসের খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছে কর্ণাটকে। কর্ণাটকের মোট জনসংখ্যার মধ্যে লিঙ্গায়েত সম্প্রদায় ১৭ শতাংশ। তারপরই রয়েছে ভোক্কালিগা। তারা ১১ শতাংশ। মূলত দক্ষিণ কর্ণাটকে মাইসোর অঞ্চলে ভোক্কালিগাদের বাস। ঐতিহাসিক ভাবে ১৯৯৯ সাল থেকে ভোক্কালিগারা জেডিএস-কেই ভোট দিয়ে আসছে। তবে ২০১৮ সালে দক্ষিণ কর্ণাটক বা মাইসোর অঞ্চলে বেশ ভালো ফল করেছিল বিজেপি। সেবারে ভোক্কালিগা অধ্যুষিত এলাকায় ডবল ফিগারে আসন লাভ করেছিল বিজেপি। তবে এবার সেই আসন সংখ্যা নেমে এসেছে ৬-এ। তবে সেই অর্থে এই অঞ্চলে ভোট শতাংশ কমেনি বিজেপির। তবে এই অঞ্চলে জেডিএস-এর একটা বড় অংশের ভোট গিয়েছে কংগ্রেসের দিকে। এর জন্যই এই অঞ্চলে ৩৭টি আসনে জিতেছে কংগ্রেস। এই অঞ্চলে আগেরবার যেখানে জেডিএস জিতেছিল ২৬টি আসন, তারা এবার এই অঞ্চলে পেয়েছে মাত্র ১৪টি আসন।

এদিকে দক্ষিণের মতো মধ্য কর্ণাটকেও এগিয়ে কংগ্রেস। এই অঞ্চলে ৭টি আসনে বিজেপি জয়ী। ২৪টি আসনে জয়ী কংগ্রেস। হায়দরাবাদ-কর্ণাটকেও অনেকটাই এগিয়ে কংগ্রেস। এই অঞ্চলে কংগ্রেস জিতেছে ২০টি আসনে। ৬টি আসনে জয়ী বিজেপি। এই অঞ্চলে জেডিএস ৩টি আসনে জয়ী। এদিকে কর্ণাটকে সার্বিক ভাবে পিছিয়ে পড়লেও বেঙ্গালুরু এলাকায় কংগ্রেসকে টক্কর দিয়েছে বিজেপি। এই অঞ্চলের ১৫টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। কংগ্রেস এগিয়ে ১৭টি আসনে। এছাড়া উপকূলীয় কর্ণাটকে অবশ্য এগিয়ে বিজেপি। এই অঞ্চলে ১৪টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। ৬টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। এই অঞ্চল থেকেই সূচনা হয়েছিল হিজাব বিতর্কের। অপরদিকে উত্তর কর্ণাটকে বিজেপি অনেকটাই জমি হারিয়েছে। এই অঞ্চলে ৩১টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। বিজেপি জিতেছে মাত্র ১৬টি আসনে।

(Feed Source: hindustantimes.com)