জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মহাত্মা গান্ধীর আবক্ষমূর্তির আবরণ উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতে নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ধ্বংস হওয়া শহর হিরোশিমায়। জাপানে আসন্ন জি৭ গোষ্ঠীর বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই। আন্তর্জাতিক মঞ্চে শান্তির বার্তা দিতে এর আগেও একাধিক বার মোহনদাস গান্ধীকে কাজে লাগিয়েছে মোদী সরকার। এ বার জাপানে। আগামী ১৯ থেকে ২১ মে জাপানে অনুষ্ঠিত হবে জি৭ গোষ্ঠীর বৈঠক। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ছায়ায় এই মুহূর্তে ঢাকা পড়ছে অনেক কিছুই। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রত্যেকটা দেশই নিজের মতো করে চেষ্টা করছে।
হিরোশিমার ধ্বংসে শিউরে ওঠা গান্ধী বলেওছিলেন, বিশ্বকে যদি মারণ বোমার অপশক্তি থেকে রক্ষা করতেই হয় তবে অহিংসাই একমাত্র পথ। সেই হিসেবে হিরোশিমায় তাঁর মূর্তি বসানোর ভিন্ন তাৎপর্যও রয়েছে।
ভারত ছাড়াও হিরোশিমায় জি৭ সম্মেলনে আমন্ত্রিত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম। থাকবে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলির মঞ্চ, আফ্রিকান ইউনিয়ন। জি৭-ভুক্ত রাষ্ট্রের শীর্ষ সম্মেলনে এবার আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে যোগ দিতে চলেছে ভারত। কূটনৈতিক মহলের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্ব-জোড়া মেরুবিভাজনের কারণে সম্প্রতি জি২০-র বৈঠকে কোনও সহমতে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি।
আর ভারতের অবস্থান তো এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট স্পর্শকাতর। এক দিকে, নয়াদিল্লির উপরে পশ্চিমি বিশ্বের চাপ, অন্য দিকে, রাশিয়ার সঙ্গে তার অতীত বোঝাপড়া ও সাম্প্রতিক বাণিজ্যিক ঘনিষ্ঠতার চাপ। এদিকে আবার রাশিয়ার সঙ্গে তার এই বহুস্তরীয় যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে ভ্লাদিমির পুতিনকে অস্ত্রত্যাগে বাধ্য করুক ভারত– আন্তর্জাতিক দুনিয়া এমন একটা প্রত্যাশা নিয়ে বহু দিন ধরেই ভারতের মুখের দিকে তাকিয়ে। কিন্তু সমস্ত সমীকরণের এত সহজ-সরল সমাধান ভারতের পক্ষে করা সম্ভবও নয়। দেশের ভিতরেও বিরোধী দল থেকে অভিযোগ উঠছে।
এক শীর্ষ কূটনীতিকের মতামত থেকে যা বেরিয়ে আসছে তা সারাংশে এরকম: ইদানীং এটা স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের গুরুত্ব বাড়ছে। আসলে অতীতেও দেখা গিয়েছে, পরিবেশ দূষণ, বিশ্ব-উষ্ণায়ন, সন্ত্রাস, জনস্বাস্থ্য, উন্নয়নের জরুরি ও কঠিন বিষয়গুলিতে ভারত বরাবর নানা সমাধানসূত্র নিয়ে এসেছে। কিন্তু এবার কীসের প্রত্যাশা?
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ভারতের অবস্থানকেই ওই মঞ্চে আর একবার তুলে ধরবেন। শোনা যাচ্ছে, আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমেই সংঘাতের নিরসনের জন্য আবেদন করবেন তিনি। এর আগেও তিনি পুতিনকে বলেছিলেন, এই সময়টা যুদ্ধের নয়। হয়তো আর একবার সেই কথাই শোনা যাবে তাঁর মুখে।
(Feed Source: zeenews.com)