মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ সিদ্দারামাইয়ার, কোন গোপন সমীকরণে গদি দখল কর্ণাটকে, ৫০-৫০?

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ সিদ্দারামাইয়ার, কোন গোপন সমীকরণে গদি দখল কর্ণাটকে, ৫০-৫০?

কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন সিদ্দারামাইয়া। উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেব শপথগ্রহণ করলেন ডিকে শিবকুমার। উল্লেখ্য, দীর্ঘ টালবাহানা, আলোচনার পর চূড়ান্ত হয়েছিল ফর্মুলা। সেই ফর্মুলা অনুযায়ী ক্ষমতা ভাগ করা হয়েছে কর্ণাটকের দুই হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতার মধ্যে। প্রসঙ্গত, ১৩৫টি আসনে জিতে কর্ণাটকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেও সিদ্দারামাইয়া বনাম ডিকে-র দ্বন্দ্বে অস্বস্তিতে পড়েছিল কংগ্রেস। কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার এবং সিদ্দারামাইয়া এই আবহে দিল্লিতে থেকে দফায় দফায় বৈঠক করেন হাইকমান্ডের সঙ্গে। অবশেষে সিদ্দারামাইয়াকেই মুখ্যমন্ত্রী করছে কংগ্রেস।

সূত্রের খবর, গত রবিবার গোপন ব্যালটে বিধায়কদের থেকে যে মত নেওয়া হয়েছিল, তাতে এগিয়ে ছিলেন সিদ্দারামাইয়া। আর তার ভিত্তিতেই সিদ্দারামাইটাকেই ফের একবার গদিতে বসালেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। জনা গিয়েছে, ১৭ মে-র গভীর রাতে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রিত্বের ‘ফর্মুলা’ চূড়ান্ত করেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। সূত্রের খবর, দুই নেতাকেই ‘আড়াই বছরের’ ফর্মুলাতে রাজি করানো হয়েছে। অর্থাৎ, কংগ্রেস সরকারের মেয়াদের প্রথম আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন সিদ্দারামাইয়া, আগামী আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসবেন শিবকুমার। এর আগে ডিকে শিবকুমার জোর গলায় দাবি জানিয়ে এসেছিলেন যে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে, না হলে তিনি কোনও পদই গ্রহণ করবেন না। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে ‘আড়াই বছরের ফর্মুলায়’ রাজি করানো গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এর মধ্যেও রয়েছে শর্ত। জানা গিয়েছে, আড়াই বছরের ফর্মুলা নিয়ে যদি কোনও নেতা মুখ খোলেন, তাতে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাম কমবে। এই আবহে এই শর্ত মানা হবে না। এদিকে আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত শিবকুমারকেই কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি রাখা হবে। এই আবহে লোকসভায় কর্ণাটক থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন কংগ্রেসের ঝুলিতে ভরার গুরুদায়িত্ব রয়েছে ডিকের কাঁধে। তার ওপরও হয়ত নির্ভর করবে পরবর্তী আড়াই বছরের ভাগ্য। এদিকে ডিকে-র ভাই তথা কংগ্রেস সাংসদ ১৮ মে সংবাদমাধ্যমকে আড়া বছরের ফর্মুলার কথা বলেছিলেন। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণার সময় কংগ্রেসের সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল বলেছিলেন, ‘আমরা শুধু মানুষের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগ করে নেব। এটাই ফর্মুলা।’

প্রসঙ্গত, এর আগে রাজস্থান, পঞ্জাব, ছত্তিশগড়ে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। দাবি করা হয়, ছত্তিশগড়েও ভূপেশ বাঘেল এবং টিএস সিং দেও-কে ‘আড়াই বছরের ফর্মুলা’য় রাজি করানো হয়েছিল আগেরবার। তবে শেষ পর্যন্ত টিএস সিং দেও-কে আর মুখ্যমন্ত্রী করা হয়নি। এই নিয়ে দিল্লিতে বহুবার বৈঠক করেছিলেন টিএস সিং দেও। তবে ভূপেশ বাঘেল শেষ পর্যন্ত নিজের গদি ধরে রেখেছিলেন। এদিকে ভোটমুখী রাজস্থানে অশোক গেহলট বনাম সচিন পাইলটের লড়াই এখনও জারি রয়েছে। এছাড়া পঞ্জাব এবং মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সরকার হারাতে হয়েছে কংগ্রেসকে। পঞ্জাবে দল ছন্নছাড়া হয়ে পড়ায় ভোটে ভরাডুবি হয়। আর মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলে মাঝপথেই কংগ্রেস সরকার পড়ে যায়। এবার কর্ণাটকেও একই পরিস্থিতি হয় কিনা, সেদিকে নজর থাকবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

(Feed Source: hindustantimes.com)