সাদা পাথরে লেখা এই সংখ্যাগুলো কী কাজে লাগে? রেলপথ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে?

সাদা পাথরে লেখা এই সংখ্যাগুলো কী কাজে লাগে? রেলপথ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে?

কলকাতা: ভারতীয় রেল বিশ্বের বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে একটি। এত বিশাল নেটওয়ার্ক পরিচালনা করা সহজ নয় মোটেই। এই কাজটি সুচারুভাবে করতে রেল বিভিন্ন নম্বর সিস্টেম এবং সিগন্যাল ব্যবহার করে। এই সিস্টেমগুলির মধ্যে একটি হল রেল লাইনের পাশে সাদা পাথরে কালো রঙে লেখা সংখ্যা।

সাদা পাথরে লেখা সংখ্যা কী কাজে লাগে: ট্রেনের রুটে আলাদা করে কোনও ল্যান্ডমার্ক থাকে না। পাথরের গায়ে লেখা এই সংখ্যাগুলোই ল্যান্ডমার্ক। এগুলো মাইলফলক হিসেবে কাজ করে। ধরা যাক ট্রেন যাত্রার সময় কোনও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস জানলা দিয়ে নিচে পড়ে গেল। এই সময় কী করণীয়? জানলার বাইরে প্রথম যে মাইলফলকটা নজরে আসবে তার নম্বর নোট করে রাখতে হবে। তারপর স্টেশনে নেমে সেই যাত্রী কোন ট্রেনে যাচ্ছিলেন এবং সেই নম্বর সিআরপিএফ-কে জানাতে হবে।

একইভাবে চালক যদি ট্রেন চালানোর সময় ট্র্যাকে কোনও সমস্যা দেখেন, তখন তিনি মাইলফলকের নম্বরটি নিকটবর্তী রেল স্টেশনে জানিয়ে দেন। এর আরেকটি ব্যবহার আছে। কোনও রুটে মেরামতের কাজ চললে চালককে আগেই একটা তালিকা দেওয়া হয় যে অমুক এবং অমুক মাইলস্টোনের মধ্যে মেরামতি চলছে, ধীরে চালান।

এই মাইলফলকগুলিকে এখন নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, যখন ভারতীয় রেলওয়ে রুটে মাইলফলক স্থাপন করা হয়েছিল, তখন বাষ্পচালিত ট্রেন চলত। অর্থাৎ কয়লার ইঞ্জিন। এরপর আসে ডিজেল লোকোমোটিভ ট্রেন। এই দুই ধরনের ট্রেনেই মাইলফলকের কাজ করেছে এই পাথর। এরপর ধীরে ধীরে বৈদ্যুতিক লোকোমোটিভ।

মানে বিদ্যুৎচালিত ট্রেন। রেলওয়ের এত বড় নেটওয়ার্কে বিদ্যুতায়নও বড় কাজ। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আওতায় রেলপথ বিদ্যুতায়ন করা হয়। গত কয়েক বছরে, কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে এবং জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমানোর প্রচেষ্টার কারণে, ভারতীয় রেলের বিদ্যুতায়নের কাজ আরও গতি পেয়েছে। ২০২৩ সালের মার্চ মাসের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভারতের ৯০ শতাংশেরও বেশি রেল নেটওয়ার্ক বিদ্যুতায়িত হয়েছে।

বিদ্যুতায়নের কারণে রেল লাইনের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো হয়। তাতে লাগানো হয় নীল রঙের প্লেট। এবং হলুদ কালিতে লেখা হয় নম্বর। এখন মাইলফলকের পরিবর্তে এই খুঁটিগুলিই রেলপথের ল্যান্ডমার্কে পরিণত হয়েছে। যেমন কোনও খুটিতে লেখা আছে ২৩৬/১৬।

অর্থাৎ এই পাথরটি যে কোনও প্রধান লাইনের প্রথম স্টেশন থেকে ২৩৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। উদাহরণ হিসেবে যদি মুম্বই থেকে দিল্লি রুটের কথা ধরা হয় তাহলে এটা মুম্বইতে শূন্য কিমি থেকে শুরু হয় এবং দিল্লি আসার সময় দূরত্ব অনুসারে বাড়ে। নিচে লেখা ১৬ নম্বরের অর্থ হল এই খুঁটিটি ২৩৬ এবং ২৩৭ কিমির মধ্যে ১৬তম খুঁটি। সাধারণত এক কিমির ব্যাসার্ধের মধ্যে ১৫ থেকে ১৮টি খুঁটি পোঁতা হয়। কিছু এলাকায় এই সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০ পর্যন্ত হতে পারে।

(Feed Source: news18.com)