কোনও কোনও এলাকার ইতিহাস ঢাকা পড়ে থাকে বিস্মৃতির অতলে। আবার এমন অনেক কথাই রয়ে গিয়েছে ইতিহাসের পাতায় যা খুব কম মানুষই জানে। পরবর্তীকালে সেই সব এলাকায় তৈরি হয়েছে রহস্য।
রাজস্থান জয়সলমের শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে কুলধারা নামে রয়েছে একটি গ্রাম। সেই গ্রামও এমনই রহস্যের অবগুণ্ঠনে আবৃত। এই গ্রামের সব মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে চলে যান। লোক মুখে ফেরে নানা গল্প। লোকের বিশ্বাস, এই গ্রামে রয়েছে ভূতের উৎপাত।
আসলে এই গ্রামে বেশ কিছু পুরনো বাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে একেবারে ধ্বংসস্তূপের আকারে। মনে করা হয় প্রায় ২০০ বছর আগে এই গ্রামের বাসিন্দারা রাতারাতি বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যান।
অভিশপ্ত গ্রাম—
কথিত আছে, এই গ্রামেই ছিল এক ব্রাহ্মণের মেয়ে। সে দেওয়ান সেলিম সিংকে পছন্দ করত। সেলিম সিং-ও ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু পালিওয়াল ব্রাহ্মণরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। তারপরেই শুরু হয় দেওয়ানের অত্যাচার। সেই অত্যাচার থেকে বাঁচতেই কুলধারা গ্রামের বাসিন্দারা পালিয়ে যান।
মনে করা হয়, কুলধারা গ্রামটি স্থাপিত হয়েছিল ১২৯১ সালে। মূলত পালিওয়াল ব্রাহ্মণরা এখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন। সমৃদ্ধ এই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই কৃষি, পশুপালন ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর জন্য এভারেস্টের মাথায়! নতুন নজির গড়লেন এই ভারতীয়, অবিশ্বাস্য ঘটনায় তাজ্জব দেশ
এখন পরিত্যক্ত এই গ্রাম দেখতে আসেন পর্যটকেরা। তাঁরা এই সব জরাজীর্ণ বাড়িঘর দেখেন। একটি মন্দির অবশ্য সংস্কার করে দেওয়া হয়েছে এখানে। কিছু বাড়িও সংস্কার করা হয়েছে পর্যটকদের দেখানোর জন্য। তবে এই এলাকায় কোনও রকম ব্যবসা-বাণিজ্য হয় না।
পর্যটন মরশুম—
রাজস্থান এমনিতেই গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড উত্তপ্ত থাকে। এই এলাকায় পর্যটনের জন্য গ্রীষ্মকাল একেবারেই আদর্শ নয়। তবে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের আদর্শ সময় অক্টোবর থেকে মার্চ।
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই গ্রামে ঢুকতে পারেন পর্যটকরা। সূর্যাস্তের পর বন্ধ হয়ে যায় দরজা। গাড়ি নিয়ে এই গ্রামে ঢুকতে গেলে ৫০ টাকা এবং সাধারণ পর্যটকদের ২০ টাকা ফি দিতে হয়।