কলকাতা: মাশরুম একটি লাভজনক ব্যবসা। ৫০,০০০ টাকার কম বিনিয়োগেও এই ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে৷ বিভিন্ন শাক-সবজি চাষাবাদের পাশাপাশি মাশরুম চাষ করে কৃষকরা দ্বিগুণেরও বেশি মুনাফা অর্জন করছেন।
বর্তমান যুগে অসংখ্য শিক্ষিত তরুণ-তরুণী কৃষিকাজকে তাঁদের পেশা হিসেবে গ্রহণ করছেন। তাঁরা এর থেকে যথেষ্ট আয়ও করছেন। কম টাকা বিনিয়োগে মাশরুম চাষ শুরু করে, যে কেউ ভাল মুনাফা অর্জন করতে পারেন। বর্তমানে মাশরুমের চাহিদা বেশি এবং এর জন্য খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না।
যে কেউ নিজের বাড়ি থেকে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যদিও সারা বছর মাশরুম চাষ করা যেতে পারে, কিন্তু, শীতের মরশুম মাশরুম উৎপাদনের জন্য বিশেষভাবে অনুকূল। কারণ শীতকাল মাশরুম খাওয়ার উপযুক্ত সময়।
উপার্জনের সম্ভাবনা –
এক নজরে জেনে নেওয়া যাক উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি জেলার সাইদানপুর গ্রামের কৃষক রাজেশের সাফল্যের গল্প। প্রাথমিকভাবে, আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে, রাজেশ ২০,০০০ টাকার সামান্য বিনিয়োগে মাশরুম চাষ শুরু করেছিলেন। তিনি এখন প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে তাঁর ব্যবসা বাড়িয়েছেন। রাজেশের মতে, মাশরুম চাষে মাত্র ১ লাখ টাকার বিনিয়োগের মাধ্যমে ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যে প্রায় ৩-৩.৫ লাখ টাকা আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে৷
মাশরুম চাষের পদ্ধতি –
প্রতি বর্গমিটারে খুব সহজেই ১০ কিলোগ্রাম মাশরুম উৎপাদন করা যায়। ন্যূনতম ৪০×৩০ ফুট জায়গায় তিন ফুট চওড়া তিনটি র্যাক তৈরি করে মাশরুম চাষ করা যেতে পারে। এই ব্যবসায়িক উদ্যোগ শুরু করার জন্য সরকারি ভর্তুকিও পাওয়া যায়।
কম্পোস্ট তৈরির পদ্ধতি –
কম্পোস্ট তৈরির জন্য ধানের খোসা ভিজিয়ে ডিএপি, ইউরিয়া, পটাশ, গমের ভুসি, জিপসাম এবং কার্বোফুরান দিয়ে দিতে হবে। এরপর মিশ্রণটি প্রায় দেড় মাস রেখে দিতে হবে। এরপর কম্পোস্ট তৈরি হয়ে যাবে। এরপর, গোবর ও মাটির সমপরিমাণ মিশ্রণ মিশিয়ে প্রায় দেড় ইঞ্চি পুরু একটি স্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে। এর উপরে কম্পোস্টের দুই থেকে তিন ইঞ্চি পুরু স্তর যোগ করতে হবে। ভাল আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার জল স্প্রে করা হয়। অবশেষে, কম্পোস্টের একটি দুই ইঞ্চি স্তর জমলে মাশরুম উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া যায়।
মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ –
বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা কেন্দ্রে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কারও যদি বড় আকারের চাষের পরিকল্পনা থাকে তবে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে ভাল। সরকার মাশরুম চাষের জন্য ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি প্রদান করে।