বন: জার্মানিতে সন্তানের উপর অধিকার হারালেন এক ভারতীয় দম্পতি। শিশুটির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মেলে বলে অভিযোগ। তাই দীর্ঘদিন ধরে সে দেশের শিশুকল্যাণ বিভাগে রয়েছে ওই শিশুটি। মা-বাবা ইচ্ছাকৃত ভাবে শিশুটিকে আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ। তাতে শিশুটির উপর অভিযুক্ত দম্পতির কোনও অধিকার নেই বলে রায় দিয়েছে জার্মানির এক আদালত। ভারত সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই দম্পতি। কোলের শিশুকে ফেরানোর দায়িত্ব ১৪০ কোটি ভারতবাসীর হাতে ছাড়লেন বলে জানিয়েছেন (Germany News)।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে জার্মানির শিশু কল্যাণ বিভাগের জিম্মায় রয়েছে আরিহা শাহ (Ariha Shah) নামের ওই শিশুটি। শুক্রবার জার্মান সরকারের হতে আরিহার দায়িত্ব সমর্পণ করেছে আদালত। অসাবধনতাবশত শিশুটি আঘাতপ্রাপ্ত হয় বলে দাবি করেছিলেন অভিযুক্ত দম্পতি। কিন্তু তাঁদের সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বরং ইচ্ছাকৃত ভাবেই আঘাত করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে আদালত।
জার্মান আদালতে আবেদন খারিজ হওয়ার পর ভারত সরকাররে দ্বারস্থ হয়েছেন অভিযুক্ত দম্পতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবেন বলে আশাবাদী তাঁরা। শিশুটিকে ভারতে ফেরাতে ভারত সরকারের সাহায্য প্রার্থনা করছেন। সংবাদমাধ্যমে তাঁরা বলেন, “আরিহাকে ১৪০ কোটি ভারতবাসীর হাতে ছেড়ে দিলাম আমরা।”
এর আগে, ভারত সরকারের জনকল্যাণ বিভাগের হাতে আরিহাকে তুলে তুলে দেওয়া হোক বলে আবেদন জানিয়েছিলেন অভিযুক্ত দম্পতি। কিন্তু জার্মান আদালতে সেই আবেদনও গৃহীত হয়নি। বরং ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে আরিহার মাথায় এবং পিঠে যে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় এবং পরবর্তী কালে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার যৌনাঙ্গে যে আঘাতের চিহ্ন মেলে তা স্নান করানোর সময়ই লাগে বলে আদালেত উঠে আসে।
জার্মান আদালতের দাবি, অভিযুক্ত দম্পতির কাছে মোটেই সুরক্ষিত নয় আরিহা। মা-বাবা ইচ্ছাকৃত ভাবেই তাকে আঘাত করেছে। আঘাত নিয়ে প্রশ্ন করলে, তাঁরা নিজেদের দাবি-দাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি দেখাতে পারেননি এবং বার বার বয়ান বদল করেছেন বলেও জানায় আদালত।
এর আগে, গত ২ জুন বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি। জার্মান ফস্টার কেয়ারে আরিহাকে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আরিহার সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ভাষাগত অধিকারের পরিপন্থী বলে জানান তিনি। শুধু তাই নয়, এই ঘটনায় ভারত সরকার রীতিমতো উদ্বিগ্ন বলেও জানান। আরিহাকে দেশে ফেরাতে ১৯ দলের ৫৯ জন সাংসদ জার্মান রাষ্ট্রদূতকে আলাদা করে চিঠিও দিয়েছেন। ভারত আরিহার দেখভাল করতে সক্ষম বলে জানানো হয় তাতে। তার পরেও ভারত সরকার এবং অভিযুক্ত দম্পতি, কারও হাতেই আরিহার দায়িত্ব অর্পণ করেনি জার্মান সরকার।
(Feed Source: abplive.com)