রাত হলেই আচমকা মেট্রো বাতিল! চরম হয়রানি নিত্যযাত্রীদের, মিস হচ্ছে লোকাল ট্রেন

রাত হলেই আচমকা মেট্রো বাতিল! চরম হয়রানি নিত্যযাত্রীদের, মিস হচ্ছে লোকাল ট্রেন

এগারো মিনিট পরেই টালিগঞ্জ স্টেশন থেকে ডাউন বজবজ লোকাল আছে। রবীন্দ্র সদন মেট্রোর প্ল্যাটফর্মে ঢুকেই ডিজিটাল বোর্ডে দেখলেন যে এক মিনিট পরে মেট্রো আসবে। তাতেই মাথায় হিসাব ছকে নিলেন- সদন থেকে রবীন্দ্র সরোবর (যে স্টেশনে নেমে টালিগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে যাওয়া যায়) যেতে সাত মিনিট লাগবে। মেট্রো থেকে নেমেই দৌড়ে স্মার্টকার্ড পাঞ্চ করে স্টেশনে পৌঁছাতে লাগবে মোটামুটি দু’মিনিট। তাহলেই ট্রেনটা পেয়ে যাবেন। কিন্তু যাত্রীদের দাবি, সেই ছক কষেও লাভ হচ্ছে না। কারণ আচমকা একটি মেট্রো ‘বাতিল’ হয়ে যাচ্ছে। কোনওরকম ঘোষণা করা হচ্ছে না। স্রেফ স্টেশনের ডিজিটাল বোর্ডে মেট্রো আসার সময় পালটে গিয়েছে। শেষপর্যন্ত যখন সদন থেকে মেট্রোয় উঠছেন, ততক্ষণে লোকাল ট্রেন টালিগঞ্জ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। পরের ট্রেনের জন্য প্রায় ৫০ মিনিট অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

আর বিচ্ছিন্নভাবে একদিন সেরকম হচ্ছে না, বরং রাতের দিকে হামেশাই এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, সকাল-বিকেল-সন্ধ্যায় একই সমস্যা হলেও রাতে সেই ‘রোগ’ মহামারীর আকার ধারণ করেছে। যে বিষয়টি কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষও (নর্থ-সাউথ মেট্রো করিডর)। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, লাইনে কাজের জন্য সেই সমস্যা হচ্ছে। সেই কাজ মিটে গেলেই মোটামুটি ঘড়ির কাঁটা ধরে মেট্রো আসবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

সেই আশ্বাসে অবশ্য মন গলেনি যাত্রীদের। বরং প্রায়শই এরকম ঘটনার সম্মুখীন হওয়ায় তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছেন তাঁরা। রীতিমতো বীতশ্রদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। উগরে দিচ্ছেন ক্ষোভ। তাঁদের বক্তব্য, দিনভর কাজের শেষে চূড়ান্ত ক্লান্ত হয়ে যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। তারপর হামেশাই মেট্রো বাতিল হয়ে গেলে কার ভালো লাগে? তাও যাঁরা মেট্রো থেকে নেমে হেঁটে, অটোপথে বা রিক্সায় বাড়ি ফেরেন, তাঁদের তাও বেশি দেরি হচ্ছে না। কিন্তু এমন তো প্রচুর মানুষ আছেন, যাঁরা রবীন্দ্র সরোবরে নেমে টালিগঞ্জ থেকে ট্রেন ধরেন অথবা কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনে নেমে নিউ গড়িয়া স্টেশন থেকে ক্যানিং, বারুইপুর, ডায়মন্ড হারবার, লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালের মতো ট্রেন ধরেন। তাঁরা তো একটি ট্রেন ফস্কালেই তো এক ঘণ্টার গল্প আছে।

ভুক্তভোগী যাত্রীদের প্রশ্ন, মেট্রোর এরকম গাফিলতির জন্য রোজ-রোজ কি ট্রেন ফস্কাতে ভালো লাগে? কবে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে, সেই প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ করছেন তাঁরা। তবে কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রো আধিকারিকদের শুধু আশ্বাস, শীঘ্রই সমস্যা সমাধান হবে।

(Feed Source: hindustantimes.com)