সংখ্যালঘু সমর্থন জোগাড়ে উদ্যোগী BJP, উত্তরপ্রদেশ থেকে শুরু, ‘মোদি মিত্র’ শংসাপত্র মুসলিমদের

সংখ্যালঘু সমর্থন জোগাড়ে উদ্যোগী BJP, উত্তরপ্রদেশ থেকে শুরু, ‘মোদি মিত্র’ শংসাপত্র মুসলিমদের

নয়াদিল্লি: কর্নাটক নির্বাচনের পর মাত্র ১০ রাজ্যে একক ভাবে ক্ষমতায় রয়েছে দল। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Elections 2024) আগে তাই কোনও খামতি রাখতে নারাজ বিজেপি (BJP)। এবার সংখ্য়ালঘুদের কাছে টানতে উদ্যোগী হল বিজেপি শিবির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) প্রশংসকদের বিশেষ শংসাপত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত নিল দলের সংখ্যালঘু শাখা (BJP Minority Cell)।

বিগত ন’বছরে মোদি সরকার কী কাজ করেছে, সেই খতিয়ান নিয়ে সংখ্যালঘু দল এবং সংগঠনগুলিকে পাশে পেতে এগোচ্ছে বিজেপি। জায়গায় জায়গায় চলবে প্রচার অভিযান। উত্তরপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে গড়ে তোলা হবে সংযোগ। তাতে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা এবং কাজে সমর্থন জানাবেন যাঁরা, তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ‘মোদি মিত্র’ শংসাপত্র (Modi Mitra)।

বিজেপি-র সংখ্যালঘু শাখার তরফে জানানো হয়েছে, ২২ জুন, বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের দেববন্দ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে। ২৩ জুন বাগপত, মেরঠ এবং ২৪ জুন গাজিয়াবাদে সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। দেববন্দেই ১৫০ জন সংখ্যালঘু মুসলিমদের হাতে ‘মোদি মিত্র’ শংসাপত্র তুলে দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।

শুধুমাত্র ইসলামি সংগঠন বা মুসলিম সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ নন, মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের কাছেও পৌঁছনোর লক্ষ্য রয়েছে বিজেপি-র। তাদের এই কর্মসূচিতে দলের ১ লক্ষ মুসলিম কর্মী অংশ নেবেন বলে জানানো হয়েছে। দেববন্দে দেশের বৃহত্তম ইসলামিক স্টাডিজ সেন্টার রয়েছে। তাই সেখান থেকেই শুরু হচ্ছে কর্মসূচি। বাস যোজনা-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন যে সমস্ত সংখ্যালঘু মানুষ, তাঁদেরও ডাকা হচ্ছে।

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এ বছর জানুয়ারি মাসে বিজেপি-র জাতীয় বৈঠকে সংখ্য়ালঘুদের সমর্থন জোগাড়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তাঁর সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সমর্থন জোগাড় করতে হবে বলে সেখানেই বার্তা দেন মোদি। এবার সেই কর্মসূচির সূচনা হচ্ছে সর্বাধিক লোকসভা আসনের অধিকারী উত্তরপ্রদেশ থেকে।

‘মোদি মিত্র’ শংসাপত্র বিলির জন্য এখনও পর্যন্ত বিজেপি-র সংখ্যালঘুর শাখা ১০ রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে চিহ্নিত করেছে, সম্মিলিত ভাবে দেশের মোট সংখ্যালঘু জনসংখ্য়ার ৩০ শতাংশের বসবাস যেখানে। মোট ৬৫টি লোকসভা কেন্দ্রে এই কর্মসূচি চালানো হবে।

বিজেপি-র সংখ্যালঘু বিভাগের সর্বভারতীয় সভাপতি জামাল সিদ্দিকি বলেন, “ক্যাডার ছাড়াও সর্বস্তরের সংখ্যালঘু মানুষের কাছে পৌঁছনোর প্রচেষ্টা চলছে। আইনজীবী, অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, অধ্যাপক, চিকিৎসক এবং বিশিষ্টজনেদের কাছে যাব আমরা, যাঁরা বিজেপি-র অংশ নন কিন্তু মোদিজির শাসনকার্যে এবং প্রকল্পের প্রতি আস্থাবান।”

এই কর্মসূচির জন্য ৬৫টি লোকসভা কেন্দ্রে থেকে একজন এবং বিধানসভা কেন্দ্রপিছু একজন করে ইনচার্জ বেছে নেওয়া হয়েছে। দলমত নির্বিশেষে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের বিত্তশালী ব্য়বসায়ী এবং বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলবেন তাঁরা। ইনচার্জদের সকলকে এক একটি কেন্দ্র থেকে ২৫ জন এমন বিশিষ্ট সংখ্যালঘু ব্যক্তির কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে আপাতত ৫০ হাজার সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে ‘মোদি মিত্র’ শংসাপত্র বিলির লক্ষ্য নিয়েছে বিজেপি।

এর পর, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে দিল্লিতে বিরাট সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। সেখানে ‘মোদি মিত্র’ শংসাপত্রপ্রাপ্ত সকলের জমায়েত হবে। মোদি খোদ তাঁদের উদ্দেশে বক্তৃতা করবেন। যাঁরা শংসাপত্র পাবেন, তাঁদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রক্ষা করবে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর যাবতীয় উদ্যোগ, বার্তা মেসেজে পৌঁছে দেওয়া হবে তাঁদের কাছে।

এর আগে, সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের স্থানীয় নির্বাচনেও সংখ্যালঘু মুসলিমদের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয় বিজেপি। বিশেষ করে পসমন্দা মুসলিমদের সমর্থন জোগাড়ে চালানো হয় প্রচার। চিরাচরিত প্রথা থেকে বেরিয়ে এসে  উত্তরপ্রদেশ পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩২ জন মুসলিমকে প্রার্থীও করে বিজেপি। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন আবার জয়ীও হন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে যত জন মুসলিমকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি, তাঁদের ৯০ শতাংশই পসমন্দা মুসলিম ছিলেন।

(Feed Source: abplive.com)