নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই প্রথম কোনও চার্জশিট গ্রহণ করল সিবিআই স্পেশাল কোর্ট

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই প্রথম কোনও চার্জশিট গ্রহণ করল সিবিআই স্পেশাল কোর্ট

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই প্রথম কোনও চার্জশিট গ্রহণ করল সিবিআই স্পেশাল কোর্ট। কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি ঘোষের চার্জশিট গ্রহণ করল আদালত। প্রতারণা, চক্রান্ত, নথি জাল, দুর্নীতি দমন আইনে ৭(এ), ৭(৮) ধারায় চার্জশিট গ্রহণ। ফের সিবিআই তদন্তের ধরণ নিয়ে নির্দেশনামায় ক্ষোভপ্রকাশ বিচারকের।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্য়ে সাতটি চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। তার মধ্যে আজ প্রথম কোনও চার্জশিট গ্রহণ করল আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত। এর আগে একাধিক প্রশ্ন তুলে সিবিআইয়ের ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন বিচারক। এদিন শুনানি শুরুর আগে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন সিবিআইয়ের দুই ডিআইজি। তারপর চার্জশিট গ্রহণ করেন তিনি।

তদন্ত নিয়ে একাধিকবার প্রশ্নের মুখে পড়ার পর, শুক্রবার অবশেষে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের দেওয়া এই প্রথম কোনও চার্জশিট গ্রহণ করল আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালত। তবে তার আগে এদিন নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয় আদালতে। বিচারকের সঙ্গে বৈঠক করেন এসএসসি দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের সিটের প্রধান DIG অশ্বিন সেনভি এবং সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধান DIG জয়দেবন।

প্রাইমারি টেট, এসএসসির গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম থেকে দ্বাদশ, এই পাঁচটি মামলায় মোট সাতটি চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে সিবিআই কিন্তু তার একটিও এতদিন গ্রহণ করেনি আদালত। এর আগে দেখা গেছিল, প্রাইমারি টেট মামলায় চার্জশিট জমা নিয়ে বারবার বিচারকের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল এই মামলায় তদন্তকারী অফিসারকে।

কেন টাকার বিনিময়ে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের অভিযুক্ত হিসেবে না দেখিয়ে সাক্ষী হিসেবে দেখানো হয়েছে, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করে এদিন তদন্তকারী অফিসারের থেকে ব্যাখ্যাও চেয়ে পাঠিয়েছিলেন বিচারক!এই প্রেক্ষাপটে এদিন শুনানি শুরুর প্রায় ৪০ মিনিট আগে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের সিটের প্রধান এবং সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধান আদালতে আসেন। সোজা চলে যান বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারকের চেম্বারে।

দু’পক্ষের প্রায় ৩০ মিনিট বৈঠক হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে কোনও কড়া পদক্ষেপ না করার জন্য আর্জি জানান তাঁরা। বিচারককে তাঁরা ব্যাখ্যা দেন, যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে, তাঁদের সংখ্যাটা অনেক বেশি! তাহলে তো অনেককে গ্রেফতার করতে হবে।

এরপর শুনানির শুরুতেই বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক জানতে চান, বেআইনিভাবে যাঁরা চাকরি পেল, তাঁদের তালিকা আছে? উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী সম্মতি দেন। সেকথা শুনে তালিকা দেখতে চান বিচারক। তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে কথা বলে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, সেটা অফিসে রয়েছে। বিচারক জানতে চান, তাঁদের বয়ান রেকর্ড করেছেন? বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে জানিয়ে, সেই সংক্রান্ত কেস ডায়েরি বিচারকের কাছে দেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। কেস ডায়েরি দেখে বিচারক বলেন, এটা দেখে আপনি বুঝতেই পারছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তদন্ত কী করে শেষ করবেন।

যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সংখ্যা অনেক বেশি বলে জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। বিচারক বলেন, কাদের সাক্ষী হিসেবে দেখাবেন, কাদের অভিযুক্ত হিসবে, সেটা আপনারা ঠিক করুন। কিন্তু সবাইকে তো ছেড়ে দেওয়া যাবে না। ব্যবস্থা তো নিতে হবে।

এরপর তিনি চার্জশিট গ্রহণ করার কথা জানান বিচারক। শুক্রবার ধৃত কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল, ও এজেন্ট নীলাদ্রি ঘোষের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিট গ্রহণ করেছে আদালত।তাতে IPC-র ৪২০, ১২০ বি, ৪৬৭, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারা এবং দুর্নীতিদমন আইনের সাত-এ ও আট নম্বর ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

(Feed Source: abplive.com)