শেষ মুহূর্তে বন্ধু লুকাশেঙ্কো সহায় হলেন পুতিনের, বিদ্রোহীদের শাস্তি দিতে পারবে না রাশিয়া

শেষ মুহূর্তে বন্ধু লুকাশেঙ্কো সহায় হলেন পুতিনের, বিদ্রোহীদের শাস্তি দিতে পারবে না রাশিয়া

মস্কো: যুদ্ধ চলাকালীনই আচমকা গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি। সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের ডাক। শনিবার দিনভর রাশিয়ার দিকেই নজর আটকে ছিল সকলের। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রুদ্ধশ্বাস সব ভিডিও সামনে আসতে থাকে। মারাত্মক কিছু ঘটতে চলেছে বলেই ধরে নিয়েছিল গোটা বিশ্ব। কিন্তু সেই পরিস্থিতি আপাতত এড়াতে পারল রাশিয়া। কারণ সে দেশের বিদ্রোহী ভাড়াটে যোদ্ধারা মস্কো থেকে পিছু হটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রক্তপাত এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে PMC Wagner। যদিও এর নেপথ্যে গোপন সমঝোতা রয়েছে, যার আওতায় দুই পক্ষই কার্যত আপসে এসেছে।

ক্রেমলিন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলারুসের রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো মধ্যস্থতা করেছেন। তাতে ভাড়াটে যোদ্ধা সংগঠন PMC Wagner এবং রুশ সরকারের মধ্যে গোপন সমঝোতা হয়েছে, যার আওতায় মস্কো থেকে পিছু হটেছে PMC Wagner। তার বিনিময়ে PMC Wagner-এর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনকে গ্রেফতার করবে না মস্কো। তিনি বেলারুসে গিয়ে আশ্রয় নেবেন।

ক্রেমলিন সূত্রে খবর, দুই পক্ষের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তার আওতায় ইয়েভগেনির বিরুদ্ধে দায়ের সব অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। তাঁর ডাকে সশস্ত্র বিদ্রোহ এবং অভ্যুত্থান ঘটাতে শামিল হয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ করা হবে না।  ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, PMC Wagner বাকি সদস্য, যাঁরা এই বিদ্রোহে অংশ নেননি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে তাঁদের। পুতিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে লুকাশেঙ্কোর। তাঁর হস্তক্ষেপেই এবারের মতো সঙ্কট এড়ানো গেল বলে জানা গিয়েছে।

রাশিয়ার আধা সামরিক বাহিনী PMC Wagner. এটি মূলত একটি বেসরকারি সংস্থা। অর্থের বিনিময়ে রুশ সেনাবাহিনীতে যোদ্ধা সরবরাহ করে থাকে তারা। তবে রুশ আইনকানুন সে ভাবে কার্যকর হয় না এই সংস্থার উপর। এই PMC Wagner সংস্থাই ক্রেমলিনের সেনাশাসককে উৎখাত করার ডাক দেয়। সংস্থার প্রধান ইয়েভগেনি একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করে জানান, ২৫ হাজারি বাহিনী নিয়ে মস্কো অভিমুখে এগোচ্ছেন তাঁরা। একেবারে শেষ দেখে ছাড়বেন। মাঝখানে কোনও কিছু এলে গুঁড়িয়ে দেবেন।

ইয়েভগেনির এই ঘোষণায় চরম সঙ্কট দেখা দেয় রাশিয়ায়।  PMC Wagner রুশ সেনার একটি হেলিকপ্টার ধ্বংসের পাশাপাশি, দক্ষিণের বেশ কিছু সেনাশিবিরও দখল করে নেয় বলে জানা যায়। মস্কো থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে ছিল তারা। বিগত কয়েক মাস ধরে চলে আসা সংঘাতই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে মত কূটনীতিকদের। তাঁদের মতে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল PMC Wagner. কিন্তু তাদের নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করেই রাশিয়া একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে প্রত্যাঘ্যাতের হুঁশিয়ারিও দেন ইয়েভগেনি।

চিন্তায় ফেলে দিয়েছে রুশ প্রশাসনকে। কারণ বিগত কয়েক মাস ধরেই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে তীব্র বিরোধে জড়িয়েছেন ইয়েভগেনি।শুক্রবার তিনি দাবি করেন, মস্কোর তরফে তাঁর বাহিনীকে নিশানা করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে। এর প্রত্যাঘাত সইতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তার পরই শনিবার চরম সঙ্কট উপস্থিত হয়। বিগত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার মসনদে ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু এর আগে এমংন প্রত্যক্ষ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে।

(Feed Source: abplive.com)