বীরভূম: সিউড়ি নলেন গুড়ের সন্দেশ পাড়ি দিল আমেরিকা। তাও জুন মাসের এই ভরা গরমে। ক্রেতার অনুরোধ মতো এমনই ব্যবস্থাপনা করেছে সিউড়ির আরটি গার্লস স্কুল সংলগ্ন একটি মিষ্টির দোকান। জেলা সদরের একটা ছোট্ট দোকান থেকে নেদারল্যান্ডে ছেলে মেয়েকে এই সন্দেশ পৌঁছে দিতে লক্ষ্ণৌ নিবাসী কেএন যাদব চার মাস আগেই এই সন্দেশের জন্য অগ্রিম বুকিং করেছিলেন। রবিবার সেই সন্দেশ পাড়ি দিয়েছে লখনউ।
কেএন যাদব জানান, দেশ বিদেশের নানা জায়গায় ঘুরেও এমন সুস্বাদু মিষ্টি তার চোখে পড়েনি। সুদূর আমেরিকায় এই সন্দেশ পৌঁছে দিতে পেরে খুশি দোকানের মালিক বাপি ঘোষাল। তবে এই সন্দেশ যোগের পিছনে রয়েছে এক অদ্ভুদ কাহিনী। লখনউ নিবাসী চিকিৎসক সোনালী সাহা সিউড়ির সেহেড়া পাড়ার ছোট্ট এই মিষ্টির দোকান থেকে সন্দেশ নিয়ে যান। কলকাতার চিকিৎসকের সিউড়ির সঙ্গে যোগ গত সতেরো বছর ধরে। তিনি লক্ষ্ণৌ সঞ্জয় গান্ধি পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিক্যাল সায়েন্সে চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত।
তিনি জানান, লখনউয়ের বছর ৮৫-র কেএন যাদব তাঁর পরিচিত। তাঁকেই তিনি সিউড়ির সন্দেশ উপহার দেন। সেই সন্দেশ খেয়ে প্রেমে পড়েন কে এন যাদব। বাক্সে থাকা ফোন নম্বর দেখে সরাসরি তিনি সিউড়ির ওই মিষ্টির দোকানে যোগাযোগ করেন। আবদার করেন, যে কোনওভাবে জুন মাসে তাঁকে নলেন গুড়ের সন্দেশ বানিয়ে দিতে হবে। সেই মতোই সন্মদেশ বানানো হয়েছে।
মালিক বাপি ঘোষাল জানান, আগে দেশের বহু জায়গা এমনকি আবুধাবিতে তাদের এই তাল সন্দেশ গিয়েছে। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে অর্ডার দিয়ে জুন মাসে নলেন গুড়ের মিষ্টি করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আবহাওয়া তাল সন্দেশ তৈরির পরিবেশ নয়। সঙ্গে এই অসময়ে খেজুরের গুড় জোগাড় করা বড্ড কঠিন কাজ। তবে কোনও প্রকারে বৃদ্ধের দাবি মতো গুড়ের সন্দেশ ব্যবস্থা করা হয়। এরপর সেই সন্দেশ চিকিৎসক সোনালী সাহা যাদববাবুর জন্য নিয়ে যান। কেএন যাদব জানান, ৮৫ বছর বয়সে তিনি বিশ্বের বহু দেশ ঘুরেছেন। কিন্তু এই মিষ্টি তাঁকে মুগ্ধ করেছে।নেদারল্যান্ডে এই গ্রীষ্মে ছেলে মেয়েকে আমার দেশের মিষ্টি পৌঁছাতে পারব এটাই আনন্দের।
এ দিন মিষ্টির দোকানে গিয়ে দেখা গেল বিমান যাত্রার জন্য সাজানো হচ্ছে অসময়ের নলেন গুড়ের সন্দেশ। বিদেশে মিষ্টি পাঠাতে অন্যরকম প্রস্তুতি নিতে হয়। দোকানের মালিক জানান, দু-কেজি সন্দেশ গেল আমেরিকায়। বাকি কয়েক কেজি পাড়ি দিয়েছে বেনারস।
(Feed Source: news18.com)