টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে অতীতে অন্তত ৩ বার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী অভিযাত্রীরা

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে অতীতে অন্তত ৩ বার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী অভিযাত্রীরা

কলকাতা: আটলান্টিকের (Atlantic Ocean) গভীরে চিরতরে হারিয়ে যাওয়া ‘টাইটানিক’-র (Titanic) ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে হালেই মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে সাবমার্সিবল ডুবোজাহাজ ‘টাইটান’-র (Titan)। তবে এমন ঘটনা প্রথম নয়। প্রাণহানি না ঘটলেও টাইটানিকের কঙ্কাল দেখতে গিয়ে ভয়ঙ্কর সব অভিজ্ঞতা (Titan Like Incident) হয়েছিল কারও কারও, যাঁদের অন্যতম হলিউডের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার জেমস ক্যামেরন।

ক্যামেরনের স্মৃতিতে…
১৯৯৮ সালে ‘টাইটানিক’ ছবির জন্য অস্কার পেয়েছেন ক্যামেরন। কিন্তু ডুবে যাওয়া জাহাজের কঙ্কাল নিয়ে তাঁর উৎসাহ দীর্ঘদিনের। ১৯১২ সালে যে ‘টাইটানিক’ ডুবে গিয়েছিল, তার ধ্বংসাবশেষ খুঁজতে অন্তত ৩৩ বার মহাসমুদ্রের অতলে ডুব দিয়েছেন এই চলচ্চিত্রকার। তারই একবারের অভিজ্ঞতা এখনও মনে করলে শিউরে ওঠেন। ১৯৯৫ সালে ডক্টর আনাতোলি সাগালেভিক এবং এক রাশিয়ান ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটলান্টিকের গর্ভে নেমেছিলেন ক্যামেরন। হঠাৎ সমুদ্রগর্ভের মাটিতে বালির ঝড় ওঠে। ভয় পেয়ে যান চালক। অজান্তেই বলে ওঠেন, ‘ওহ নো।’ তাঁর কথা শুনে বুক কেঁপে উঠেছিল ক্যামেরনের। বায়োগ্রাফি ‘দ্য ফিউচারিস্ট’-এ এই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে পরিচালক লিখেছেন, ‘চালকের মুখে এই ধরনের কথা আমরা কেউ শুনতে চাই না। এক মুহূর্তের জন্য তাই চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলাম।’ তুমুল জলস্রোতে তত ক্ষণে ডুবোজাহাজের বিদ্যুৎ সংযোগ চলে গিয়েছে, ব্যাটারির চার্জও খানিক পরে শেষ। মহাসাগরের মাটি ছোঁয়ার অভিযান বাতিল করে তখন উপরে ওঠার তোড়জোড় করছে ক্যামেরনদের ডুবোজাহাজ। কিন্তু নতুন বিপদ। উপরে ওঠার পরিবর্তে ক্রমেই মহাসাগরের গর্ভে নেমে যাচ্ছে সেটি। আধঘণ্টা এই ভাবেই অপেক্ষা করেছিলেন ক্যামেরন ও তাঁর টিম। কিন্তু লাভ হল না। ৮০ ফুট উচ্চতার উপরে উঠতে পারল না ডুবোজাহাজ। যদিও জলের স্রোত তাদের টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের থেকে অনেকটা দূরে নিয়ে গিয়েছে। তিন বারের চেষ্টায় আখেরে জলের উপরে ভেসে ওঠে ডুবোজাহাজ। হিমাঙ্কের নিচে থাকা ঠান্ডা জলের স্তর ছেড়ে উঠে আসে। এই গোটা পর্বে অবশ্য ঘণ্টাপাঁচেক কেটে গিয়েছে।

এই ধরনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা অবশ্য় ক্যামেরনের আগেও হয়েছে। সেটা ১৯৯১ সাল। জীববিজ্ঞান ও ভূতাত্ত্বিক গবেষণার পাশাপাশি IMAX ফিল্মের ধ্বংসাবশেষ খুঁজতে মহাসাগরের গভীরে নেমেছিলেন কানাডার আন্ডারসি ফিজিশিয়ান জো ম্যাকলনিস। ওই অভিযানে দুটি রুশ ডুবোজাহাজ অন্তত ১৭ বার ‘ডাইভ’ দেয়। একেবারে শেষ বার কোনও মতে রক্ষা পায় ডুবোজাহাজটি। শিউরে ওঠার মতো অভিজ্ঞতা হয়েছিল মাইকেল গুইলেনেরও। ২০০০ সালে তিনি প্রথম সাংবাদিক হিসেবে ওই জায়গাটি পরিদর্শনে যান তিনি। অভিযানের মধ্যে হঠাৎই টের পান, ডুবোজাহাটি কোনও খামখেয়ালি জলস্রোতে নিজের মতো এগিয়ে চলেছে। ঘণ্টাখানেক এই ভাবে আটকে থাকার পর আবার উঠতে শুরু করে তাদের সাবমেরিন।

পর পর তিনটি এমন ঘটনার পরও কি যথেষ্ট সতর্ক হয়নি ওশানগেট এক্সপিডিশন? হলে কি ‘টাইটন’-র পরিণতি এড়ানো যেত? উঠছে প্রশ্ন।

(Feed Source: abplive.com)