জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার! অতিমারির নেপথ্যে উহানের গবেষণাগার! ‘সত্যতা’ জানাল US রিপোর্ট

জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার! অতিমারির নেপথ্যে উহানের গবেষণাগার! ‘সত্যতা’ জানাল US রিপোর্ট

নয়াদিল্লি: অতিমারির ভয়াবহতা কেটে স্বাভাবিকতা ফিরেছে রোজকার জীবনে। কিন্তু নোভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তি ঘিরে বিবাদ মেটেনি এখনও (Coronavirus Origin)। গোড়া থেকেই করোনার প্রকোপের জন্য় কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছিল চিনকে। গবেষণা চলাকালীন উহানের গবেষণাগার থেকেই ভাইরাস বাইরে ছড়িয়ে পড়ে বলে ওঠে অভিযোগ, যাকে ঘিরে তিক্ততা বাড়ে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে। এতদিন পর সেই নিয়ে গোপন তথ্য সামনে এল, যাতে বলা বয়েচে, করোনাভাইরাস উহানের গবেষণাগার থেকে ছড়িয়েছিল বলে কোনও প্রমাণ মেলেনি।

আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগের হাতে এই সংক্রান্ত গোপন নথিপত্র ছিল। তার একটিই সম্প্রতি সামনে এসেছে। তাতেই করোনাভাইরাস এবং তার জেরে উদ্ভুত অতিমারি পরিস্থিতি নিয়ে একটি রিপোর্ট মিলেছে। তাতে উহান ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পক্ষে কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে দাবি করা হয়েছে (US Report on COVID)।

উহানের ওই গবেষণাগার সংলগ্ন এলাকাতেই প্রথম করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে বলে জানা যায়। তাতে গোড়া থেকেই চিনের ওই গবেষণাগারের বিষয়বস্তু এবং গবেষকদের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন অনেকে। তাকে ঘিরে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্কেরও অবনতি হয়। কিন্তু গত ২৩ জুন আমেরিকার ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স-ের ডিরেক্টর আভরিল হাইন্সের দফতর থেকে যে ১০ পাতার রিপোর্ট সামনে এসেছে,তাতে অতিমারির সূচনাপর্বে উহানের ওই গবেষণাগারটির ভূমিকা নিয়ে নানা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

ওই রিপোর্টের যা লেখা রয়েছে, তা হল, ‘অতিমারির উৎপত্তি নিয়ে যে অনুমানভিত্তিক দাবি সামনে আসে যে, ১) SARS-CoV2, যা করোনার জন্য দায়ী, তা আসলে পশুর শরীর থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছিল এবং ২) কোনও গবেষণাগার থেকেই ছড়ায় ভাইরাস, দু’টির  গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে’। তবে অতিমারির নেপথ্যে উহানের গবেষকদের কোনও ভূমিকাই যে নেই, এমন দাবি করা হয়নি ওই রিপোর্টে। বরং সংশয়ের কথা জানানো হয়েছে।

অতিমারির প্রকোপ নেমে আসার আগে, উহানের গবেষণাগারে করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণার তথ্য আগেই সামনে এসেছিল। তবে তা SARS-CoV2-র পূর্বপুরুষ হতে পারে না বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি-র গবেষকরাও টিকা তৈরির কাজে উহানের ওই গবেষণাগারটি ব্যবহার করে মাঝেমধ্যে। জনস্বাস্থ্য় সংক্রান্ত বিষয়ে উহানের গবেষণাগারের সঙ্গে তাদে যৌথ কর্মসূচির নজিরও রয়েছে। কিন্তু করোনা নিয়ে এর আগে যে গবেষণা হয়েছে সেখানে, তা মূলত জিন পরীক্ষার মধ্যেই সীমিত থেকেছে। বাদুড়ের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে চলেছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তবে SARS-CoV2-র নমুনা সেখানে মজুত ছিল এবং তা থেকেই অতিমারি ছড়িয়েছে বেল কোনও প্রমাণ মেলেনি।

সদ্য প্রকাশিত ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘গোয়েন্দাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, সেই অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ নাগাদই উহানের ওই গবেষণাগারের হাতে SARS-CoV2-র নমুনা আসে। তবে গবেষণা করতে গিয়ে নয়, আশেপাশে সংক্রমিত হয়ে পড়া মানুষের অচেনা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ঘটনায়, রোগ পরীক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়ে সেটি। তাই উহানের ওই গবেষণাগারে গবেষণা চলাকালীন ভাইরাস ছডি়য়ে পড়ে এবং অতিমারি দেখা দেয়, তার সপক্ষে কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ নেই’।

এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। পাঁচটি সংস্থার মধ্যে মাত্র দু’টি উহানের গবেষণাগার থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর তত্ত্বকে অতিমারির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে দেখতে রাজি। অন্য দু’টি সংস্থা আবাার তার পরিপন্থী। অতিমারির উৎপত্তি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তেই উপনীত হওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে তারা। তেব জৈব হাতিয়ার হিসেবে যে SARS-CoV2-কে ব্যবহার করা হয়নি, একমত প্রায় সকলেই।

(Feed Source: abplive.com)