পঞ্চায়েত ভোটে কি ফের তৃণমূলের দাপট? নাকি ছাপ ফেলবে বিরোধীরা? কী বলছে সমীক্ষা?

পঞ্চায়েত ভোটে কি ফের তৃণমূলের দাপট? নাকি ছাপ ফেলবে বিরোধীরা? কী বলছে সমীক্ষা?

কলকাতা: নির্ঘণ্ট প্রকাশ থেকে মনোনয়ন এবং স্ক্রুটিনি, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দফায় দফায় অশান্তি হিংসার সাক্ষী থেকেছে বাংলা। হুজ্জুতি, মারামারি, ঝামেলা, বোমাবাজি, প্রাণহানি, কিছুই বাকি থাকেনি। নির্বিঘ্নে নির্বাচনের স্বপ্ন এবারও তাই অধরাই থেকে গিয়েছে (Panchayat Elections 2023)। বরং যত এগিয়ে আসছে ভোটগ্রহণের দিন, ততই বাড়ছে অভিযোগের বহর। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শাসকদল তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধীরা। প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও। দীর্ঘ গড়িমসির পর কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোটগ্রহণের তৎপরতা দেখা দিলেও, ভোটগ্রহণের দিনও আশঙ্কার অবকাশ থেকে যাচ্ছে। তবে শাসক-বিরোধী প্রচারে খামতি রাখছে না কোনও পক্ষই (Cvoter Opinion Poll Live)।

কিন্তু যাঁদের মতামত নিতে এই পঞ্চায়েত নির্বাচন,  যাঁদের উপর সবকিছু নির্ভর করছে, সেই ভোটাররা কী ভাবছেন? ভোটগ্রহণের আগে তা নিয়ে আঁচ পেতে রাজ্য় জুড়ে সমীক্ষা চালায় আন্তর্জাতিক খ্য়াতিসম্পন্ন সংস্থা C-Voter। রাজ্যের সমস্ত জেলা পরিষদের সব ক’টি কেন্দ্রে পৌঁছে ১০ হাজার ৫৪৮ জনের জনের সঙ্গে কথা বলেছেন সমীক্ষকরা। সমীক্ষা চালানো হয়েছে ১৫ জুন থেকে ২৬ জুনের মধ্য়ে। এই সমীক্ষা কোনও রাজনৈতিক ভবিষ্য়দ্বাণী নয়। শুধু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভোটারদের ভাবনার আভাস পাওয়ার চেষ্টা।

কিন্তু জনমত সমীক্ষা হোক কিংবা বুথ ফেরত সমীক্ষা…কোনওটাই শেষ কথা নয়! গণতন্ত্রে শেষ কথা হল মানুষ ব্য়ালট বক্সে কিংবা ভোটযন্ত্রে কী রায় দিয়েছে।…সেটা একমাত্র তিনিই জানেন। সম্পূর্ণভাবে যা গোপনীয়। আর তাই বাক্স কিংবা যন্ত্র খুললে তবেই বোঝা যায়, মানুষ কী চেয়েছে। তাই কখনও সমীক্ষা সম্পূর্ণ রূপে সঠিক  প্রমাণিত হয়, কখনও আংশিক আবার কখনও আসল ফলের ঠিক উল্টোটাও হয়। কারণ বহুক্ষেত্রেই ভয়-ভীতি কিংবা অন্য়ান্য় নানা কারণে মানুষ সমীক্ষকদের সামনে মনের কথা প্রকাশ করেন না। তাই পঞ্চায়েতে ভোটের ফলাফলে আসলে কী হবে, তা জানাও যেমন এই সমীক্ষার মধ্য়ে দিয়ে সম্ভব নয়, তেমনই কাউকে প্রভাবিত করার কোনও চেষ্টাও সমীক্ষক সংস্থা করে না। আর তারা যে পরিসংখ্য়ান দেয়, তা হবহু আপনাদের সামনে আমরা তুলে ধরি মাত্র। দায়িত্বশীল সংবাদমাধ্য়ম হিসাবে আমাদের আসল অপেক্ষা ১১ জুলাই অবধি। সেদিনই জানা যাবে গ্রাম বাংলা গেল কার দখলে।

কিন্তু এখনও পর্যন্ত জেলায় জেলায় যে সমীকরণ চোখে পড়ছে, তাতে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোন দল এগিয়ে রয়েছে দৌড়ে, কড়া টেক্কা দিতে পারে কোন দল, তা নিয়ে আগাম সমীক্ষা চালানো হয়। ABP C-Voter-এর সেই সমীক্ষা কী বলছে, চোখ রাখুন।

আগামী ৮ জুলাই, শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট নির্বাচন। গোটা রাজ্যে এক দফাতেই হবে ভোটগ্রহণ। এর আগে, ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল পাঁচ দফায়। কিন্তু, ২০১৮ সালে ভোট হয় এক দফায়। এবারও পঞ্চায়েত ভোট এক দিনেই ঘোষণা করে রাজ্য় নির্বাচন কমিশন। তা নিয়ে আগাগোড়া প্রশ্ন তুলে আসছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, সর্বদল বৈঠক না ডেকে, ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা হয়েছে। বিরোধী শিবিরের কারও মতামত গ্রহণ না করে একতরফাভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। বিষয়টি আদালত পর্যন্তও পৌঁছয়, যদিও তাতে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি আদালত।

আগামী ৮ জুলাই রাজ্যের ২০টি জেলা পরিষদ, ৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ৩ হাজার ৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটগ্রহণ হবে। ভোট গণনা হবে ১১ জুলাই। ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করাতে চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এখনও পর্যন্ত ৩৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া নিশ্চিত। ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসেছে ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। পরে আরও ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর কথা নিশ্চিত করেছে অমিত শাহর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী, আরও ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন। কেন্দ্র কি সেই বাহিনী পাঠাবে? সেই নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

যে কারণে ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত, প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সহ একাধিক দাবিতে, ডেপুটেশন দিয়েছে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ। তাদের দাবি, ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।  প্রতিটি বুথে মোতায়েন করতে হবে যথেষ্ট সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী।

(Feed Source: abplive.com)