কলকাতা: বাড়িতে থাকতে আর ভাল লাগছে না! তবে মঙ্গলে গিয়ে থাকার কথা এবার ভাবা যেতে পারে। কারণ ইতিমধ্যেই চারজন মানুষ থাকতে শুরু করে দিয়েছেন মঙ্গলের মাটিতে।
খটকা লাগল? মঙ্গল অভিযান চলছে যান্ত্রিকভাবে, সেখানে মানুষ কী করে গিয়ে থাকতে শুরু করল!
প্রস্তুতি চলছে। মানুষ কীভাবে মঙ্গলে গিয়ে থাকবে, কী ভাবে খাপ খাইয়ে নেবে লাল গ্রহের পরিবেশ, আবহাওয়ার সঙ্গে তা নিয়েই চলছে পরীক্ষা নিরীক্ষা। তাই চার বিজ্ঞানীকে এই পৃথিবীর বুকেই রাখা হয়েছে এমন এক কৃত্রিম পরিবেশে যা একেবারেই মঙ্গলের মতো। আগামী এক বছর এই কৃত্রিম পরিবেশে বাস করবেন তাঁরা।
এই ‘সিমুলেটেড মার্স হ্যাবিট মিশন’ বা কৃত্রিম মঙ্গলবাস অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেলি হ্যাস্টন। সঙ্গে রয়েছেন ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার রস ব্রকওয়েল, মেডিক্যাল অফিসার নাথান জোন্স এবং সায়েন্স অফিসার আঙ্কা সেলারিউ। হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টারে ১,৭০০-বর্গফুটের এক থ্রি-ডি-প্রিন্টেড মঙ্গল-ভূমি তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই রয়েছেন তাঁরা।
পৃথিবীর বুকে তৈরি করা এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্রু হেলথ অ্যান্ড পারফরম্যান্স এক্সপ্লোরেশন অ্যানালগ’ (CHAPEA)। মঙ্গলের মাটিতে মানুষ নামলে কোন কোন চ্যালেঞ্জের মুখে তাকে পড়তে হতে পারে তা, তখন ঠিক কীভাবে মোকাবিলা করবে মানুষ, তা খতিয়ে দেখতেই এই কৃত্রিম অভিযান। এখানে কখনও যন্ত্র বিকল হবে, কখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে, আবহাওয়া-পরিবেশের সমস্যা তো থাকবেই।
এখানে গবেষকদের ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে স্পেসওয়াক করতে হবে। ফসল ফলাতে হবে, নিজেদের খাবার বানিয়ে খেতে হবে। ব্যায়াম করা, স্বাস্থ্যবিধি, যন্ত্রাংশের রক্ষণাবেক্ষণ, ব্যক্তিগত সময়, পড়াশোনা, গবেষণা, ঘুম-সহ সব কাজই করে দেখতে হবে। মঙ্গলের মাটিতে দূর নিয়ন্ত্রিত রোবোট, হেলিকপ্টার সদৃশ ড্রোন প্রভৃতির ব্যবহারও করে দেখতে হবে।
CHAPEA-এর প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর গ্রেস ডগলাস বলেন, ‘এই কৃত্রিম অভিযান থেকে সংগৃহীত নানা তথ্য NASA-র মঙ্গলে মানব-অভিযান পরিকল্পনায় সহায়তা করবে।’
আমেরিকান স্পেস এজেন্সি-র তরফে এমন তিনটি অ্যানালগ মিশনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রথমটি শুরু হল চলতি বছর। পরেরটি ২০২৫ ও ২০২৬ সালে আরও দু’টি।
এই কৃত্রিম অভিযানে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘মার্স ডিউন আলফা’, যা একটি থ্রি-ডি-প্রিন্টেড কাঠামো। এতে দীর্ঘমেয়াদে গবেষণা চালানো সম্ভব। এখানে রয়েছে চারটি ব্যক্তিগত ক্রু কোয়ার্টার, আলাদা ওয়ার্কস্টেশন, মেডিক্যাল স্টেশন। এছাড়া রয়েছে কমন লাউঞ্জ এলাকা, ফসল ফলানোর এলাকা এবং একটি গ্যালি।