উত্তেজনা স্তিমিত হলেও অশান্তির চাপা আগুন এখনও ধিকিধিকি জ্বলছে ফ্রান্সে, ধৃত ১৩০০-র বেশি

উত্তেজনা স্তিমিত হলেও অশান্তির চাপা আগুন এখনও ধিকিধিকি জ্বলছে ফ্রান্সে, ধৃত ১৩০০-র বেশি

প্যারিস: একনজরে দেখলে মনে হবে যেন গোটা দেশটা রাতারাতি পুলিশের দখলে চলে গিয়েছে। জায়গায় জায়গায় উর্দিধারীদের কড়া প্রহরা, চেকিং। পুলিশি জুলুমের বিরুদ্ধে গত কদিন ধরে অশান্তির যে দাবানল জ্বলছে, তা শনিবার সকাল থেকেই অনেকটা স্তিমিত। তার পরও রাশ আলগা করতে চাইছে না এমান্যুয়েল মাক্রঁর প্রশাসন। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, শুক্রবার রাত পর্যন্ত ১৩১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কী পরিস্থিতি?
সংবাদসংস্থা রয়টার্সের দাবি, স্থানীয় সময় রবিবার সকালে পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। তবে প্যারিস-সহ মার্সেইল, নিস, স্ট্রাসবুর্গ শহরে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মার্সেইল শহরে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়ায়। গভীর রাতের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে বাধ্য হয় পুলিশ। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে অশান্তি শুরু হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত অন্তত ২ হাজারটি সরকারি গাড়িতে আগুন ধরিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। কম-বেশি জখম ২০০ জন পুলিশকর্মী। ধৃতদের গড় বয়স ১৭। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্রিটেন ও ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলি ফ্রান্সের সংঘর্ষবিধ্বংস্ত এলাকাগুলি থেকে তাঁদের পর্যটকদের দূরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছে। তবে এই প্রতিবাদ যে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল মাক্রঁ-র রক্তচাপ যথেষ্ট বাড়িয়েছে, তা স্পষ্ট। রবিবার থেকে নির্ধারিত জার্মানি সফর পিছিয়ে দিয়েছেন তিনি। প্যারিস, লিয়ঁ, মার্সেইল-সহ বড় শহরে এর মধ্যেই সব মিলিয়ে অন্তত ৪৫ হাজার পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সাঁজোয়া গাড়ি, হেলিকপ্টার নিয়ে তৈরি তাঁরা। সব মিলিয়ে উত্তেজনার চোরাস্রোত স্পষ্ট।

শেষকাজ নাহেলের…
দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যেই সমাহিত করা হয়েছে আলজিরিয় বংশোদ্ভূত তরুণ, নাহেল এম-কে। নাহেলের শেষকাজে তাঁর মা ও দিদিমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। প্যারিসের মফঃস্বল শহর নানতেরে-য় সমাহিত করা হয় তরুণকে। গত মঙ্গলবার, ট্র্যাফিক সিগন্যালে এই নাহেল-কেই গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। তার পর  থেকেই জ্বলছে ফ্রান্স। ঘটনার প্রতিবাদে সাদা জামা পরে রাস্তায় নামেন বহু মানুষ। গাড়ির হর্ন বাজিয়ে তাঁরা প্রতিবাদ জানান। যদিও এই ধরনের প্রতিবাদকে প্রশাসন যে মোটেও ভাল চোখে দেখছে না, সে বার্তা আগেই দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। অভিভাবকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা ছিল, সন্তানদের হিংসা থেকে দূরে রাখুন। আন্তর্জাতিক মহলের বক্তব্য, ২০১৮ সালের ‘ইয়েলো ভেস্ট’  আন্দোলনের পর এত বড় মাপের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়নি ফরাসি প্রেসিডেন্টকে। চাপের মুখেই কি কড়া হাতে রাশ ধরতে চাইছেন তিনি?

(Feed Source: abplive.com)