‘সিগন্যালিং মেরামতিতে ত্রুটির কারণইে করমণ্ডল দুর্ঘটনা’, বলছে রেলের রিপোর্ট

‘সিগন্যালিং মেরামতিতে ত্রুটির কারণইে করমণ্ডল দুর্ঘটনা’, বলছে রেলের রিপোর্ট

সিগন্যাল বিভ্রান্তির কারণেই যে করমণ্ডল দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তা নিয়ে সংশয় নেই। তবে কী কারণে এই সিগন্যালিংয়ে ত্রুটি দেখা দিয়েছিল, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। এরই মাঝে এবার প্রকাশ্যে এল রেলের তদন্ত রিপোর্টের বিষয়বস্তু। এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সিগন্যালিং মেরামতিতে ত্রুটি থাকার কারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৮ সালে এবং দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে, এই দু’বার সিগন্যালিংয়ের মেরামতিতে ত্রুটি ছিল। এর জেরেই যাত্রীবাহী করমণ্ডল এক্সপ্রেসটি লুপ লাইনে ঢুকে মালগাড়িকে ধাক্কা মারে এবং পরে হমসফর এক্সপ্রেসের ধাক্কায় এত লোকের মৃত্যু হয়।

রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার এ এম চৌধুরী নিজের রিপোর্টে দাবি করেছেন, বিভিন্ন স্তরে সিগন্যালিংয়ের ত্রুটির কারণে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং এবং টেলিকমিউনিকেশন দফতরের কিছু গলদের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তাই যান্ত্রিক গোলযোগ হলেও তা মানুষের ভুলেই হয়েছিল। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২২ সালে খড়গপুর ডিভিশনের বাঁকড়ানয়াবাজ স্টেশনে এই একই ধরনের ত্রুটি দেখা দিয়েছিল সিগন্যালিংয়ে। যার জেরে ভুল ট্র্যাকে ঢুকে পড়েছিল ট্রেন। এদিকে এই রিপোর্টটি সিবিআই-কে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা খতিয়ে দেখছে যে এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে কোনও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা।

প্রসঙ্গত, গত ২ জুন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বালাসোর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতই ছিল যে যাত্রীবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন উঠে যায় এক মালগাড়ির ওপর। ট্রেনের অধিকাংশ বগি ছিটকে পড়ে পাশের লাইনে। এই সময় উলটো দিক থেকে আসা যশবন্তপুর-হাওড়া হামসফর এক্সপ্রেসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে করমণ্ডলের লাইনচ্যুত বগিগুলিতে। এর আগে এই দুর্ঘটনা নিয়ে একটি প্রাথমিক রিপোর্টও জমা দিয়েছিল সিআরএস। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সিগন্যালিং কন্ট্রোল রুমের ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে ভুল লাইনে ঢুকে পড়ে আপ ১২৮৪১ শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এই মারাত্মক ভুলের কারণেই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এই লুপ লাইনে করমণ্ডল এক্সপ্রেসটা না ঢুকলেই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। এই পরিস্থিতিতে অটোমেটিক ব্যবস্থায় ত্রুটি ছিল না বলে দাবি উঠছিল। পাশাপাশি জেনে বুঝেই ম্যানুয়ালি এই ব্যবস্থাকে বাইপাস করা হয়েছে বলেও দাবি উঠেছিল। তবে সিআরএস রিপোর্টে বলা হচ্ছে, দু’বারের ত্রুটিপূর্ণ সিগন্যালিং রক্ষণাবেক্ষণের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

(Feed Source: hindustantimes.com)