উত্তরাখণ্ডের সীমান্তবর্তী জেলা পিথোরাগড়, উচ্চ হিমালয়ের অংশ। এখানে এমন একটি বিশেষ ভেষজ পাওয়া যায়, যা বিশ্বের সবচেয়ে দামি এবং অনন্য ভেষজের মধ্যে অন্যতম। আন্তর্জাতিক বাজারে বিশেষ চাহিদা থাকায় প্রতি বছর এটি লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়। এই ভেষজটিকে স্থানীয় ভাষায় কেড়া জাড়ি বা ইয়ারসাগুম্বা বলা হয়।
হিমালয়ের তুষার গলার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা এই ভেষজ চাষ করেন। তবে বিগত কয়েক বছরের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ায় উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর কারণে স্থানীয়দের জীবন-জীবিকার উপরও উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ছে।
দেরিতে মৌসুমি তুষারপাত এবং বর্তমানে বৃষ্টির কারণে এবারে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা হতাশায় ভুগছেন। মুন্সিয়ারির অঞ্চল পঞ্চায়েত সদস্য জগৎ মারতোলিয়া জানান, ধারচুলা ও মুন্সিয়ারির প্রায় ৮০,০০০ মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উপায় হল ইয়ারসাগুম্বা।
হিমালয়ের বরফ গলার সময় এখন অতিক্রান্ত কিন্তু এই অসময়ে হিমালয়ের তুষারপাত হওয়ায় চাষের ওপর খারাপ প্রভাব পড়েছে। এমতাবস্থায় এবারের উৎপাদনে গত বারের তুলনায় কমতি হতে পারে। ফলে বাজারে এর দামও বাড়তে দেখা যাবে।
পিথোরাগড় জেলার মুন্সিয়ারি, ধারচুলা ছাড়াও হিমালয়ের অন্যান্য রাজ্যেও ইয়ারসাগুম্বা পাওয়া যায়। ক্যানসারের ওষুধ তৈরিতেও এটি ব্যবহার করা হয়। ভারতের পাশাপাশি চিন, সিঙ্গাপুর এবং হংকংয়ে ইয়ারসাগুম্বার চাহিদা প্রচুর। সেখানকার ব্যবসায়ীরা ইয়ারসাগুম্বা কিনতে কখনও কাঠমান্ডু, কখনও ধারচুলাতে পৌঁছোন। এটি বিভিন্ন এজেন্টদের মাধ্যমে বিদেশি ব্যবসায়ীদের কাছে প্রায় প্রতি কেজি ২০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এশিয়া প্রতি বছর এটির মাধ্যমে প্রায় দেড়শো কোটি টাকার ব্যবসা করে। এই ইয়ারসাগুম্বার উৎপাদন কম থাকায় মানুষের কর্মসংস্থান ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে। পিথোরাগড় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জ্বালাপ্রসাদ গৌর জানিয়েছেন যে এই বছর ইয়ারসাগুম্বা কম উৎপাদনের কারণ জলবায়ু পরিবর্তন। গত বছর পর্যন্ত সময়মতো তুষারপাতের কারণে উৎপাদনে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি।