সাপে কামড়ানোর রোগীকে ওরাল ট্যাবলেট! শহরের হাসপাতালে প্রথম প্রয়োগেই সাফল্য

সাপে কামড়ানোর রোগীকে ওরাল ট্যাবলেট! শহরের হাসপাতালে প্রথম প্রয়োগেই সাফল্য

#কলকাতা: সাপের কামড়ে এবার নয়া ওষুধ। ওরাল ট্যাবলেটের মাধ্যমে এবার প্রথম ট্রায়ালের সাফল্য এলো এই রাজ্যেই। পূর্ব ভারতে প্রথমবার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হয় এই ট্যাবলেট। চলতি মাসের ১০ তারিখ মধ্যরাতে ২১ বছর বয়সি আমতার এক যুবককে সাপে কামড়ায়। এর পরে পরিবার তড়িঘড়ি নিয়ে আসে পার্ক সার্কাসের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

আনার পরেই ওই রোগীর দেহের সমস্ত প্যারামিটার দেখার পর চিকিৎসকরা ‘varespladib methyl’দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষামূলক ভাবে পূর্ব ভারতে এই প্রথমবার প্রয়োগ করা হয় এই ট্যাবলেট। এই ট্রায়ালের ইনভেস্টিগেটর তথা এই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায়ে জানান, এই ট্যাবলেটের সঙ্গে মাত্র ২০ ভায়েল অ্যান্টি ভেনামেই দারুন কাজ হয়েছে। আগে ৩০ থেকে ৪০ ভ্যায়োল অ্যান্টি স্নেক ভেনম দেওয়ার পরেও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখা গিয়েছে। তবে এই ট্যাবলেট নিয়ে দেওয়ায় মৃত্যু আটকানো নিয়ে অনেকাংশেই আশাবাদী চিকিৎসকরা।

প্রসঙ্গত, বাংলার ক্ষেতে খামারে কাজ করা কৃষকদের কাছে বড় আতঙ্কের নাম সাপ। চাষের কাজের সময়ে সামান্য অসতর্ক হলেই সাপের বিষে প্রাণ হারাতে হয় বহু কৃষককেই। বিশেষত দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় জেলায় সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। আমাদের দেশের এক সমীক্ষা বলছে ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ সাল এই ১৯ বছরে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষের। অর্থাৎ দেশে বছরে কমবেশি ৫৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় সাপের বিষে। সাপের কামড়ে মৃত্যু হার এতো বেশি হওয়ার কারণ হল, সঠিক সময় চিকিৎসা শুরু না হওয়া। এবার সেই মারণ বিষের কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে বিশেষ ওরাল এই ট্যাবলেট। চিকিৎসকদের ভাষায় এই ট্যাবলেটের নাম varispladib।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, আমাদের রাজ্যে বর্তমানে অ্যান্টি স্নেক ভেনাম তৈরি হয় না। ফলে এই অ্যান্টি স্নেক ভেনাম আনতে হয় দক্ষিণের রাজ্যগুলো থেকে। আর এতেই সমস্যা বাড়ে। দক্ষিণের সাপের প্রোটিন আর আমাদের রাজ্যের সাপের প্রোটিনের মধ্যে বিস্তর ফারাক আছে। তাই ব্যয় সাপেক্ষ এই অ্যান্টি স্নেক ভেনাম অনেক মাত্রায় দিলেও তা অনেক সময় কাজ করে না। তাই এই ট্যাবলেট দিয়ে যদি অ্যান্টি স্নেক ভেনাম দেওয়া যায় তাহলে মৃত্যু আটকানো অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হবে। এই বিষয় ভ্যাকসিন ফিসিসিলেটর স্নেহেন্দু কোনার জানান প্রথম ট্রায়ালের যথেষ্ঠ আশানুরূপ ফল পাওয়া গেছে, আমরা যথেষ্টই আশাবাদী। তিনি আরও জানান দেশে মোট ১১২ জনের উপর এবং আমাদের রাজ্যে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৫ জনের উপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে।

ওঙ্কার সরকার

Published by:Swaralipi Dasgupta

(Source: news18.com)