পটনা: ভালবাসা ভেঙে গেলে মানুষ কী করে?
সাহিত্যে, সিনেমায় দেখা যায় একটাই ছবি- মনের মানুষের বদলে মদের বোতলকে জড়িয়ে ধরাই তখন সবথেকে ভাল বলে মনে হয়। সমস্যা হল আদিত্য পাণ্ডে তো আবার বিহারের, ওটা মদবর্জিত রাজ্য। তাহলে তিনি করেন কী!
আদিত্য যা করলেন, তা রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা হিন্দি ছবির কথা মনে করিয়ে দেয়। রাজকুমার রাওয়ের ছবি, নাম শাদি মে জরুর আনা। বিয়ে ভাঙার পরে রাত-দিন এক করে খেটেছিল সত্তু, সরকারি চাকরি পাওয়ার পরে তাকে নিয়ে সবার হাসাহাসি বন্ধ হয়েছিল।
আদিত্য বিহারের পটনার বিষ্ণুপুর পাকরি গ্রামের ছেলে। দ্বাদশ শ্রেণী পাশ করেছেন কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় কঙ্করবাগ, পটনা থেকে। কেলাস ৮ আর ৯-এ তিনি না কি ফার্স্ট হয়েছিলেন। ক্লাস ১০-এ জীবনে আসে প্রেম। তবে সেটা ভেঙে যেতে আদিত্য মুষড়ে পড়েননি।
পড়াশোনা চলতে থাকে। এলপিউ, পঞ্জাব থেকে হাসিল করেন ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ডিগ্রি। ইঞ্জিনিয়ার হতে চাননি বলে এবার শুরু হয় এমবি-এর পড়া, ২০১৮ সালে আইআইটি রুড়কি থেকে পাসও করেন। এর পর শুরু হয় কর্মজীবন, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কে কিছু দিন চাকরিও করেন। তবে লক্ষ্য সরকারি চাকরি, তাই ব্যাঙ্কের কাজ ছেড়ে দেন। ২০১৯ থেকে শুরু করেন ইউপিএসসি-র প্রস্তুতি।
শুরুটা সহজ ছিল না। একবার তো মাত্র ২.৫ নম্বরের জন্য পাশ করতে পারেননি। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। তিনবার লাগাতার চেষ্টার পরে অবশেষে এসেছে সাফল্য, ইউপিএসসি ২০২২-এ ৪৮তম স্থান দখল করে বহাল হয়েছেন আইএএস অফিসারের পদে।
স্কুলজীবনে এক শিক্ষক না কি বলেছিলেন আদিত্যর বাবাকে- এই ছেলের যদি পড়াশোনা হয়, তাহলে তিনি গোঁফ কামিয়ে ফেলবেন! কে জানে, আদিত্য তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন কি না!
তাহলে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এপিজে কালাম সাহেবের কথা মিলল তো- গাছ লাগালে পাখিও আসে, ফলও পাওয়া যায়!