দীর্ঘকালীন চুম্বনের প্রতিযোগিতা ছিল, গিনেস বুকে রেকর্ডও হত ; বন্ধ এখন

দীর্ঘকালীন চুম্বনের প্রতিযোগিতা ছিল, গিনেস বুকে রেকর্ডও হত ; বন্ধ এখন

Longest Kiss: পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কতই না আজব ঘটনা ঘটে থাকে। অদ্ভুত সব বিষয়ের ক্ষেত্রে সৃষ্টি হয় বিশ্ব রেকর্ড (World Record)। তেমনই একটি বিভাগ হল ‘দীর্ঘকালীন চুমু’ বা ‘লংগেস্ট কিস’ (Longest Kiss)। এই নিরিখে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড (Guinness World Record) তৈরি হত। অতীতের কথা বলা হচ্ছে কারণ শেষবার এই রেকর্ড তৈরি হয়েছে ২০১৩ সালে। তবে তারপর থেকে গিনেস কর্তৃপক্ষ ‘লংগেস্ট কিস’- এর রেকর্ড গড়ার প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দিয়েছে।

কিন্তু কেন?

জানা গিয়েছে, ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল এই প্রতিযোগিতা। এর পাশাপাশি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের বর্তমান আপডেট হওয়া পলিসির সঙ্গেও প্রতিযোগিতার নিয়মনীতি আর খাপ খাচ্ছিল না, তৈরি হচ্ছিল দ্বন্দ্ব। সেই কারণেই দীর্ঘক্ষণ ধরে চুম্বনের মাধ্যমে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার প্রতিযোগিতা প্রায় ১০ বছর আগেই বন্ধ করে দিয়েছে গিনেস কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দীর্ঘতম চুম্বন ম্যারাথনের সঙ্গে এই প্রতিযোগিতা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। 

দীর্ঘতম চুম্বনের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের নিয়মগুলি কেমন ছিল

    • একটানা চুম্বনরত অবস্থায় থাকতে হতো দুই প্রতিযোগীকে। শুধু তাই নয়। একে অন্যের সঙ্গে সর্বক্ষণ ঠোঁট ছুঁইয়ে রাখতে হতো। যদি একবারও ঠোঁটের স্পর্শ ছেড়ে যাওয়ার উপক্রম হতো তাহলেই প্রতিযোগিতা থেকে সটান বাতিল হয়ে যেতেন যুগল। প্রতিযোগিতা চলাকালীন প্রতিযোগীরা স্ট্র-এর মাধ্যমে তরল কিছু পান করার অনুমতি পেতেন। কিন্তু সেই সময়েও একে অন্যের ঠোঁটের সংস্পর্শ বজায় রাখতে হতো। 
    • দীর্ঘক্ষণ চুম্বনরত অবস্থায় যুগলকে অতি অবশ্যই জেগে থাকতে হতো, ঘুমিয়ে পড়লে চলত না।
    • প্রতিযোগিতার মধ্যে চুম্বনরত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো যুগলকে। কোনও ভাবেই কোনও রকম সাহায্যকারী জিনিস ব্যবহারের অনুমতি ছিল না।
    • কোনও ভাবেই বিশ্রাম বা বিরতি নেওয়ার সুযোগ থাকত না প্রতিযোগীদের কাছে। এমনকি বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে সেখানেও যেতে হতো চুম্বনরত অবস্থায়। ডায়পার জাতীয় কোনও প্রোডাক্ট ব্যবহারের অনুমতি ছিল না। 

উল্লিখিত নিয়মাবলী দেখে আন্দাজ করাই যায় শুনতে রোম্যান্টিক লাগলেও আদতে এই প্রতিযোগিতা বেশ বিপজ্জনক। কোনও বিরাম নেই। বিশ্রাম নেই। শুধু নাগাড়ে একে অন্যকে চুমু খেয়ে যেতে হবে। একদল অন্যদের হারিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে এমন মরিয়া হয়ে উঠতেন যে সময় বয়ে গেলেও চলত প্রতিযোগিতা। এর ফলে স্লিপ ডিপ্রাইভেশনের শিকার হতেন প্রতিযোগীরা। সম্ভাবনা থাকতে সাইকোসিসের মতো রোগ হওয়ার। এমনটাই জানিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষ। ইজের ক্ষমতার বাইরে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে মরিয়া হয়ে চুমু খাওয়ার ফলে প্রতিযোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, অনেক বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে, এমন ঘটনাও শোনা গিয়েছে। 

দীর্ঘক্ষণ চুমু খেয়ে খেতাব যেতার মাশুল দিতে হয়েছে যাঁদের

    • ১৯৯৯ সালে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন ইজরায়েলের Karmit Tzubera এবং Dror Orpaz। ৩০ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট ধরে চুম্বনরত অবস্থায় ছিলেন তাঁরা। এর ফলে প্রায় অচেতন হয়ে গিয়েছিলেন এই দু’জন। প্রতিযোগিতা জিতলেও তাঁদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটতে হয়েছিল। সেখানে চরম ক্লান্তির জন্য চিকিৎসা করা হয়েছিল ইজরায়েলের এই যুগলের। 
    • ২০০৪ সালে ইতালির ৩৭ বছরের ব্যক্তি Andrea Sarti নিজের বান্ধবীকে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন এই প্রতিযোগিতায়। তরুণী ছিলেন তাইল্যান্ডের বাসিন্দা Anna Chen। ৩১ ঘণ্টা ১৮ মিনিট ধরে একে অন্যের সঙ্গে চুম্বনরত ছিলেন তাঁরা। প্রতিযোগিতা শেষে অক্সিজেন দিতে হয়েছিল যুগলকে।
    • ২০১১ সালের পরিণতি সবচেয়ে মর্মান্তিক। প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল এক মহিলার। 

লংগেস্ট কিস- এর বিশ্ব রেকর্ড

তাইল্যান্ডের যুগল Ekkachai এবং Laksana Tiranarat ২০১৩ সালে এই রেকর্ড গড়েছিলেন। ৫৮ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট ধরে চুম্বনরত ছিলেন তাঁরা। এর আগে ২০১১ সালেও বিশ্ব রেকর্ড গড়ে খেতাব ছিলেন তাঁরা।

(Feed Source: abplive.com)