তখন অনেকটাই ধীরে চলত সময়! ব্রহ্মাণ্ডের ‘ছোটবেলা’ কেমন ছিল? জানালেন বিজ্ঞানীরা

তখন অনেকটাই ধীরে চলত সময়! ব্রহ্মাণ্ডের ‘ছোটবেলা’ কেমন ছিল? জানালেন বিজ্ঞানীরা

মহাবিশ্বের জন্মের গোড়ায় নাকি বেশ ধীরেই চলত সময়। এখনকার মতো এত তাড়া ছিল না সময়ের চাকার। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনই তথ্যের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। বিখ্যাত বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা নেচার অ্যাস্ট্রোনমি স্টাডিতে চলতি সপ্তাহে সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ব্রহ্মাণ্ডের যখন সবে জন্ম হচ্ছে, তখন গোটা সময় ব্যবস্থাটাই ধীরে ধীরে চলত। কতটা ধীরে চলত সময়? বিজ্ঞানীরা অঙ্কের নিয়মে এর একটি হিসেবও দিয়েছেন। ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, তখনের তুলনায় প্রায় পাঁচগুণ দ্রুত চলে এখনকার সময়। যত ‘বুড়ো’ হয়েছে এই ব্রহ্মাণ্ড, ততই গতি বাড়িয়েছে সময়।

বিজ্ঞানীদের কথায়, বর্তমানে মহাবিশ্বের বয়স ১ কোটি ৩৭ লাখ বছর। তবে এই ব্রহ্মাণ্ডেরই যখন বয়স মাত্র ১০ লাখ বছর ছিল, তখন বেশ ধীর গতির ছিল সময়। অর্থাৎ তখনের তুলনায় এখন পাঁচগুণ দ্রুত চলে সময়। কীভাবে বোঝা গেল সময়ের এই গতি? নেচারে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের গবেষকরা জানিয়েছেন, বিশালাকারের ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর কোয়াসারের বয়স ও আকার পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, এই কৃষ্ণগহ্বরগুলি গ্যাসীয় পদার্থ ও সবচেয়ে উজ্জ্বল মহাজাগতিক অঞ্চল। তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই খোঁজ মিলেছে সময়ের গতির তফাতের। ২০১৮ সালে এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী বলেছিলেন ‘মহাবিশ্বের প্রথম দিককার ইতিহাস জানার জন্য কোয়াসার খুবই গুরুত্বপূর্ণ মহাজাগতিক প্রমাণ।’ সেই পথ ধরেই এগিয়েছিলেন নেচারে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের গবেষকরা।

প্রসঙ্গত, বিজ্ঞানী আইনস্টাইন তাঁর সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্বে বলেছিলেন, আমরা এমন এক মহাজগতে রয়েছি যার শৈশবে সময় ধীরে চলত। সেই তত্ত্বই এবার প্রমাণিত হল। সময়ের গতি আগে ধীরে ছিল, বর্তমানে পাঁচগুণ দ্রুত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। সব মিলিয়ে মোট ১৯০টি কোয়াসার পরীক্ষা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় দুই দশক ধরে চলেছে এই পরীক্ষা নিরীক্ষা। বিভিন্ন সময়ের ওই কৃষ্ণগহ্বরই জানান দেয় মহাবিশ্বের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের গতি পাল্টানোর কথা। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের অধ্যাপক জেরান্ট লুইস সংবাদ মাধ্যমকে জানান, এই গবেষণার মাধ্যমে এমন একটি সময়ে ফিরে যাওয়া হয়েছিল। যেখানে সময় খুব ধীর। অঙ্কের হিসেবে এখনের থেকে পাঁচগুণ ধীরে চলত তখনকার সময়।

(Feed Source: hindustantimes.com)