দৈনিক ১৫ ঘণ্টা ভিডিয়ো গেম খেলার ফল, ঘুমের মধ্যেও ‘ফায়ার, ফায়ার’ চিৎকার কিশোরের

দৈনিক ১৫ ঘণ্টা ভিডিয়ো গেম খেলার ফল, ঘুমের মধ্যেও ‘ফায়ার, ফায়ার’ চিৎকার কিশোরের

ঘুমের মধ্যেই হাত পা ছুঁড়ে যুদ্ধ করছে যেন ছেলে। একবার দু’বার নয়, নাগাড়ে। হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন, রাজস্থানের আলওয়ার নিবাসী এক কিশোরের এহেন আচরণে চিন্তায় অভিভাবকরা। ছেলেটি নিয়মিত ঘুমের মধ্যে ‘ফায়ার, ফায়ার’ বলে চিৎকার করে এবং মোবাইল স্ক্রিনে অনলাইন গেম খেলার মত ভঙ্গিমায় হাত ছুঁড়তে থাকে বলে তার বাড়ির লোকজন জানায় সংবাদ মাধ্যমকে। স্মার্টফোনে ক্রমাগত গেম খেলার ফলে রাজস্থানের আলওয়ারের ১৫ বছরের কিশোরটি গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ার কারণেই এমন সমস্যা দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। গেল খেলার আসক্তি তাকে এখন এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে তার এখন কাউন্সেলিং এবং চিকিৎসার প্রয়োজন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছয় মাস ধরে একটানা দিনে ১৫ ঘণ্টা মোবাইল গেম খেলেছে ওই কিশোর।

পাবজি এবং ফ্রি-ফায়ারের মতো অনলাইন গেমগুলি কী ভাবে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার ওপর প্রভাব ফেলছে, তারই একটি জলজ্যান্ত উদাহরণ হল আলওয়ার কিশোরের এমন ঘটনা৷ ১৫ বছর বয়সী ছেলেটি ছয় মাস ধরে এই গেমগুলি অবিরাম খেলেছে, যার প্রভাব মনোজগতে ব্যাপক ভাবে পড়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ছেলের এহেন আচরণে চিন্তায় পরিবারের লোকেরাও। ক্লাস সেভেনের এই ছাত্র মোবাইল গেমের প্রতি আসক্ত হওয়ার ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছিল তার। আপাতত চিকিৎসার জন্য ছেলেটিকে বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের হোস্টেলে ভর্তি করা হয়েছে।

মোবাইল গেম খেলার প্রতি ছেলেটির প্রবল আকর্ষণ তার পরিবারকে চরম উদ্বেগের রেখেছে। তার গেমিং অভ্যাস কমানোর জন্য পরিবার প্রথমে তাকে দুই মাসের জন্য সংযত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ফল হয়নি কিছুই। সুযোগ পেলেই সে মোবাইলে পাবজি-এর মতো গেম খেলতে থাকতো। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং ডাক্তারদের একটি দল বর্তমানে ছেলেটির সাথে কথা বলে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছে। তাদের তত্ত্বাবধানে ছেলেটির মানসিক স্বাস্থ্য ক্রমশ উন্নতি করছে বলেই খবর।

ছেলেটির মা গৃহপরিচারিকার কাজ করেন এবং তার বাবা একজন রিকশাচালক। মোবাইল গেমের প্রতি আসক্তির কারণে ছেলেটি খাবার থেকে শুরু করে সব কিছুই অবহেলা করছিল। ভেঙে পড়ছিল মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য। আপাতত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে সুস্থ হয়ে উঠছে সে। ডিসএবেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের একজন প্রশিক্ষক ভাওয়ানি শর্মা এ’প্রসঙ্গে বলেন, অতিরিক্ত অনলাইন গেম খেলার প্রভাবেই মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছিল ছেলেটির। এমন ঘটনা বর্তমান প্রজন্মের যন্ত্র নির্ভরতা ও প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলে দিল।

(Feed Source: hindustantimes.com)