গত সপ্তাহে ডারবানে আইসিসির বার্ষিক সভায় স্লো ওভার-রেটের শাস্তি (জরিমানা) নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র শুরু হয়ে গেলেও তড়িঘড়ি নতুন নিয়ম লাগু হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। আসলে এতদিন স্লো ওভার রেটের জন্য যে শাস্তি পেতে হতো সংশ্লিষ্ট দলের ক্রিকেটারদের, তা এক ঝটকায় কমিয়ে দেওয়া হয় অনেকটা।
এতদিন প্রতি ওভার পিছিয়ে থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট দলের ক্রিকেটারদের ২০ শতাংশ হারে ম্যাচ ফি কেটে নেওয়া হতো। নতুন নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ওভার পিছিয়ে থাকার জন্য মাত্র ৫ শতাংশ হারে ম্যাচ ফি জরিমানা হিসেবে দিতে হবে ক্রিকেটারদের। তাও আবার ম্যাচ ফি-র সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ জরিমানা করা যাবে কোনও ম্যাচে।
নতুন এই নিয়ম ক্রিকেটারদের কাছে স্বস্তিদায়ক সন্দেহ নেই। স্লো ওভার রেটের ক্ষেত্রে আর্থিক দিক দিয়ে তাঁদের অনেক কম ক্ষতির মুখ দেখতে হবে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি-র ১০০ শতাংশ, অর্থাৎ পুরোটাই জরিমানা করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি-র ৮০ শতাংশ জরিমানা হয় স্লো ওভার-রেটের জন্য।
নিয়ম পরিবর্তনের ভালো-খারাপ দিক নিয়ে আলোচনা হয় সব সময়ই। তবে এক্ষেত্রে এমন একটি তথ্য সামনে উঠে আসছে, যেখানে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত লবি কাজে লাগিয়ে স্লো ওভার-রেটের নিয়ম বদলানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আরও স্পষ্ট করে বললে বলতে হয় যে, অজি তারকা উসমান খোয়াজাই নাকি পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে স্লো ওভার-রেটের ক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের জরিমানার অঙ্ক কমিয়ে দিয়েছেন। তাঁর প্রচেষ্টাতেই নাকি নিয়ম বদলানো গিয়েছে। এমনটা দাবি করেছেন খোয়াজা নিজেও।
খোয়াজা কীভাবে আইসিসির নিয়ম বদলানোয় ভূমিকা নিয়েছেন: অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য খোয়াজার সঙ্গে আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার অফ ক্রিকেট ওয়াসিম খানের সম্পর্ক ভালো। ওয়াসিম পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে থাকার সময় খোয়াজা পিএসএলে অংশ নেন। সেই থেকেই দু’জনের সুসম্পর্ক।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ম্যাচ ফি-র ৮০ শতাংশ জরিমানা দেওয়ার পরে খোয়াজার মনে হয় যে, ক্রিকেটারদের আর্থিক দিক দিয়ে বিস্তর ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। তিনি আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার ওয়াসিম খানকে নিয়ম বদলানোর কথা বলেন।
একা খোয়াজার সঙ্গেই নয়, বরং অস্ট্রেলিয়ার কোচ ম্যাকডোনাল্ডের সঙ্গেও ওয়াসিমের সম্পর্ক ভালো। ওয়াসিম খান যখন লেস্টারশায়ারের প্রশাসনিক পদে ছিলেন, ম্যাকডোনাল্ড কোচিং করাতেন ব্রিটিশ কাউন্টি ক্লাবটিকে। ম্যাকডোনাল্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্যাপ্টেন প্যাট কামিন্সও এই প্রসঙ্গে কথা বলেন ওয়াসিম খানের সঙ্গে।
তার কিছুদিনের মধ্যেই স্লো ওভার-রেটের নিয়ম বদলানো হয়। অর্থাৎ, ওয়াসিম খান অজি ক্রিকেট লবির হয়ে কাজ করেই নাকি নিয়ম বদলানোর কাজে প্রধান ভূমিকা নিয়েছেন। তাই প্রশ্ন উঠছে যে, ক্রিকেটারদের ভালোর জন্য স্লো ওভার-রেটের নিয়ম বদলানো হয়েছে, নাকি দু-একজন ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত আব্দার রাখতে আইসিসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে?
(Feed Source: hindustantimes.com)