ভয়াবহ দৃশ্যের সাক্ষী থাকল উত্তরাখণ্ড। গত বুধবার চামোলি জেলায় ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হন ১৬ জন। গুরুতর জখম ১১ জন। সেদিনই জখম ৬ জনকে ঋষিকেশ এইমস-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এয়ারলিফ্ট করে। অন্য ৫ জন গোপেশ্বর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদেরও ঋষিকেশ এইমস-এ নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, এরই মধ্যে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমশ ভাইরাল হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে এটি ওই দুর্ঘটনার সময়ের দৃশ্য। ভিডিওটি-তে, স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, ওই প্লান্টে ভয়ঙ্কর স্ফুলিঙ্গ উঠছে। আশপাশের লোকজন বাঁচার জন্য আর্তনাদ করছেন।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নমামি গঙ্গে প্রকল্পের নিকাশী শোধনাগারটি। হঠাৎ সেখানে আগুন ধরে যায়। ভিডিও-তে দেখা যায় উপস্থিত লোকজন প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করে বাইরের দিকে দৌড়াতে শুরু করেন। কিন্তু সব কিছু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যায়। এই সময়ের মধ্যেই ১৬ জন প্রাণ হারান বলে মনে করা হচ্ছে।
চামোলি দুর্ঘটনার এই ভিডিও বলে এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। তবে নিউজ ১৮ ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি।
উত্তরাখণ্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ধন সিং রাওয়াত এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত বুধবারই গোপেশ্বর হাসপাতালে পৌঁছন। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধমি ঋষিকেশ এইমসে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খবরাখবর নেন। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের উপর নির্ভরশীলদের প্রত্যেককে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণাও করেন তিনি। জখমদের প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিহতদের পরিবারের জন্য ২ লক্ষ টাকা এবং জখমদের জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘোষণা করেছেন। এই টাকা দেওয়া হবে জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মঙ্গলবার রাতেই প্রথম দুর্ঘটনা ঘটে। নমামি গঙ্গে প্রকল্পে কর্মরত প্রহরীকে ফোনে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিজনরা। সকালে প্রকল্পস্থলে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইতিমধ্যেই ওই প্রহরীর মৃত্যু হয়েছে। রাতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে পুলিশ যখন তদন্তের জন্য ওই এলাকায় যায়, তখন দ্বিতীয়বার তড়িৎ প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
চামোলি এনার্জি কর্পোরেশনের নির্বাহী বাস্তুকার অমিত সাকসেনা জানান, মঙ্গলবার রাতে তিন দফায় বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হয়। বুধবার সকালে তৃতীয় বার সংযোগ দেওয়া হয়। তার পরেই তড়িৎ প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে।
উত্তরাখণ্ডের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) ভি. মুরুগেসান জানিয়েছেন, পুরো এলাকাটি লোহার গ্রিল ও রেলিং দিয়ে তৈরি। তার ফলেই তড়িদাহত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে পুলিশের একজন সাব-ইন্সপেক্টর ও তিনজন হোমগার্ড রয়েছেন।