নিজস্ব প্রতিবেদক : তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকে তাহলে সাম্প্রদায়িকতা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে ভারতে কলকাতা প্রেস ক্লাবে দেশটির সাংবাদিকদের উন্মুক্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ভারতীয় সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন একসঙ্গে বাংলাদেশে ৬৩ জেলায় বোমা হামলা হয়েছিল। শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, আফগানিস্তানের ট্রেনিংপ্রাপ্তরা প্রকাশ্যে মহড়া দিতো। এই হচ্ছে বিএনপি সরকারের আমল।
ড. হাছান বলেন, যখন আমরা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করি, তখন খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে বলছেন- ‘কিছু লোককে ধরে এনে আটকিয়ে রাখা হয়, চুল-দাঁড়ি লম্বা হলে তাদের জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়।’ বাংলাদেশে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকে তাহলে সেই সাম্প্রদায়িকতা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।
আ’লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশ হিসেবে সংগ্রাম করেছে এবং অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে যে দলটি প্রতিষ্ঠিত, সেটি হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর সেই সাম্প্রদায়িকতাকে আবার ফিরিয়ে এনেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে স্বাধীনতার পর ধর্মীয় রাজনীতিটা বন্ধ করা হয়েছিল, সেটি ’৭৫ সালে আবার চালু করা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, বিএনপির বহুদলীয় জোটের মধ্যেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আছে। সেখানে অনেক দল আছে, যে দলের নেতারা তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। তাদের অনেক নেতা প্রকাশ্যে ‘বাংলা হবে তালেবান’ স্লোগান দিয়েছিলেন।
বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি না- এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা বিএনপিকে গণমানুষের দল বলে দাবি করে। কিন্তু সিটি করপোরেশন, এমনকি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও তাদের দলের সবাইকে অংশ নিতে বারণ করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের বেশিরভাগই নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু তাদের নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত দিতে পারে না বিধায় তারা পারে না। যারা নিজেদের জনগণের দল হিসেবে দাবি করে বা গণমানুষের দল হিসেবে টিকে থাকতে চায় তাদের জন্য ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করা ক্ষতির কারণ। আগামী নির্বাচনও যদি তারা বর্জন করে তাহলে সেই ক্ষতি তারা আরও টের পাবে।
বাংলাদেশ নিয়ে কূটনীতিকদের বিবৃতির বিষয়ে ড. হাসান বলেন, ভারত বা পশ্চিমা দেশেও কোথায় কোথায় বিবৃতি দেয় না। কারণ তাতে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন হয়। আমাদের এখানে এ ধরনের বিবৃতির কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, কোনো রকমে আমরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আমাদের জন্য একটা চাপ, অর্থনীতির চাপ। তাদের খাওয়াতে হচ্ছে, পরাতে হচ্ছে, চিকিৎসাসহ সবকিছু দিতে হচ্ছে। এজন্য ভারত সরকারের সঙ্গে আমরা সবসময় আলোচনা করছি।
বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতার প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের এবং অন্যান্য দেশের আন্তরিক সহযোগিতা আছে। শুধু বাণিজ্যে সহযোগিতা নয়, নিরাপত্তা থেকে শুরু করে নানা সহযোগিতা আছে।
বাংলাদেশের ইলিশ ও ভারতের সিনেমা নিয়ে প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আমরা ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি করার অনুমতি দিয়েছি। আমাদের দেশে ‘পাঠান’ মুক্তি পেয়েছে, আরও কয়েকটি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। আর আমাদের ইলিশ রফতানি বন্ধ নয়, মাঝেমধ্যে ধরা বন্ধ করা হয়, গত দু’মাস ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। যখন বন্ধ থাকে তখন সবখানেই বন্ধ থাকে।
(Feed Source: sunnews24x7.com)