চাঁদা তুলে লটারি কেটে ১০ কোটি টাকার ‘জ্যাকপট’ বর্জ্য সংগ্রহকারী একদল মহিলার !

চাঁদা তুলে লটারি কেটে ১০ কোটি টাকার ‘জ্যাকপট’ বর্জ্য সংগ্রহকারী একদল মহিলার !

কোঝিকোড় : এ যেন একতার জয় ! প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দুর্ভাগ্যের বিরুদ্ধে একযোগে লড়াইয়ের ফল। কেরলের মালাপ্পুরমের ১১ জন দরিদ্র মহিলা একসঙ্গে লটারির টিকিট কেটে জিতলেন ১০ কোটি টাকা। মালাপ্পুরমের পরপ্পানানগাড়ি পুরসভা এলাকার এই ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছে। মনসুন বাম্পার লটারি কেটে প্রথম পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ওই ১১ মহিলা। তাঁদের টিকিট কাটাটোও যেন এক ধরনের গল্প। হাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় এই ১১ জনের মধ্যে ৯ জন মহিলা ২৫ টাকা করে চাঁদা দেন। বাকি দু’জনের অবস্থা আরও শোচনীয় ! তাঁরা ২৫ টাকা করেও দিতে পারেননি। তাই, সাড়ে ১২ টাকা করে চাঁদা দেন!

এই ১১ জন মহিলার জীবন-সংগ্রামটা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভরা। সংসার চালানোর জন্য তাঁরা নন-বায়োডিগ্রেডেবল বর্জ্য সংগ্রহ করেন। বিভিন্ন বাড়ি এবং প্রতিষ্ঠান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে তাঁরা জীবন-ধারণ করেন। গত আড়াই বছর ধরে তাঁদের এই সংগ্রাম চলছে। তাঁরা পুর এলাকার ৫৭ সদস্যের হরিথা কর্ম সেনার (Hks) অংশ। এই ১১ সদস্য হলেন- পি পার্বতী, কে লীলা, এমপি রাধা, এম শিজা, কে চন্দ্রিকী, ই বিন্দু, কার্তিয়ানি, কে শোভা, সি বেবি, সি কুত্তিমালু ও পি লক্ষ্মী। লটারি জেতার পর যদিও তাঁদের উচ্ছ্বাস বাঁধ ভেঙেছে, কিন্তু তাঁরা একসঙ্গেই কাজ করে যেতে চান। কারণ তাঁদের বক্তব্য, একসঙ্গে থেকেই তাঁরা লটারি জিতেছেন।

লটারি-জয়ী পার্বতী জানান, এনিয়ে চতুর্থ বার তাঁরা লটারির টিকিট কেটেছিলেন। তাই, তাঁদের জেতার কোনও আশা ছিল না। এরপর যখন তাঁরা শোনেন যে, জেতা টিকিট পলক্কড়ের এক এজেন্সির তরফে অন্য কাউকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে, তখন তাঁরা আরও ভেঙে পড়েন, ভেবেই নেন যে এটা আরও একবার হার। পার্বতী বলেন, ‘বিকালে কাজ করে যখন বাড়ি ফিরি, তখন আমার ছেলে জানতে চায় যে, আমরা টিকিটটা সংগ্রহ করেছি কি না, কারণ এক ব্যক্তি তা সংগ্রহ করার জন্য ফোন করেছিলেন।

এরপরেই তাঁদের জীবনে আসে সেই সুসংবাদ। লটারি জয়ের পর অধিকাংশ সদস্যই জানাচ্ছেন, তাঁরা লটারির টিকিটের টাকা বাড়ি নির্মাণ, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা ও ঋণ মেটানোর কাজে ব্যবহার করবেন।

প্রসঙ্গত, এই ১১ মহিলার অধিকাংশ প্রচণ্ড আর্থিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করছেন। এমনকী টাকা বাঁচানোর তাগিদে বাড়ি থেকে পুরসভা হেঁটেই যাতায়াত করেন। জয়ের পর লটারির টিকিট তাঁরা পরপ্পানানগাড়ির পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে জমা করেছেন। পরপ্পানানগাড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান উসমান এ বলেন, সবথেকে যোগ্য দলেরই সহায় হয়েছে ভাগ্য। সংসার চালাতে এঁরা প্রচণ্ড কষ্ট করছিলেন, কিন্তু কাজের প্রতি কোনও অবহেলা দেখাননি কোনও দিন।

(Feed Source: abplive.com)