জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে গত ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট। পাশাপাশি রাজ্যের মর্যাদা ছিনিয়ে নিয়ে এটিকে পৃথক দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছিল। কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্তের পরই এই নিয়ে একাধিক আবেদন দায়ের করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই সব মামলার পিটিশনের ব্যাচের শুনানি শুরু হয়েছে শীর্ষ আদালতে। সেখানেই গতকাল সরকারের তরফে বলা হয়েছে, ‘৩৭০ ধারা অস্থায়ী ব্যবস্থা ছিল।’ এদিকে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বলের দাবি, ‘১৯৫৭ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রথম আইন পরিষদের মেয়াদ শেষের পরই এই ধারা স্থায়ী হয়ে যায়।’ অবশ্য কপিল সিব্বলের এই যুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি পালটা প্রশ্ন করেন, ‘কোনও আইন পরিষদ চিরকাল স্থায়ী থাকবে না। তাহলে সেই আইন পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার এই ধারার কী হবে?’ কপিলের অবশ্য দাবি, ৩৭০ ধারা বিলোপ করে সরকার সাংবিধানিক পরিবর্তন আনেনি, বরং রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
২০১৯ সালে সংসদে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করা হয় এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন, ২০১৯ পাশ করা হয়। কেন্দ্রের এই দুই আইনের বিধান বাতিল করার দাবি জানিয়ে বেশ কয়েকটি পিটিশন জমা পড়ে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সেই পিটিশনগুলি পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি এনভি রামানার নেতৃত্বাধীন একটি সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে। পরে এনভি রামানা প্রধান বিচারপতি হন, অবসর নেন। এখন সেই মামলার শুনানি হচ্ছে বর্তমান প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে। ভারতের প্রধান বিচারপতির ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে আছেন বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কৌল, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, সঞ্জীব বিআর গাভাই এবং বিচারপতি সূর্যকান্ত।
এমনিতে ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তার ফলে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা চলে যায়। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভেঙে ফেলা হয়। যে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয় একগুচ্ছ মামলা। যে মামলাগুলি মিলিয়ে ২ অগস্ট থেকে দৈনন্দিন ভিত্তিতে শুনানি শুরু হয়।
সেইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার যে হলফনামা দাখিল করেছে, সাংবিধানিক বিষয়ের ক্ষেত্রে সেই হলফনামা বিবেচনা করা হবে না। ওই হলফনামার ভিত্তিতে রায়দানও করা হবে না বলে জানানো হয়েছে। কেন্দ্রের হলফনামায় দাবি করা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকে সেখানে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। তিন দশকের অশান্তির পর এসেছে স্থিতাবস্থা। ফিরেছে শান্তি। লাগাতার বনধ, পাথর ছোড়া এখন অতীত হয়ে গিয়েছে। জঙ্গিগোষ্ঠীদগুলিকে কোণঠাসা করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় আইনের মাধ্যমে ভূস্বর্গের মানুষকেও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।
(Feed Source: hindustantimes.com)