নয়াদিল্লি: বাড়িতে তো মানুষের পুরনো জিনিস একটা সময়ের পর কার্যত আবর্জনায় পরিণত হয়৷ আপনার -আমার বাড়িতেও বিভিন্ন জায়গায় একরকম ভাবে পুরনো জিনিস একেবারে ব্রাত্য হয়ে থাকে৷ কিন্তু সেখান থেকেও অমূল্য রতন পাওয়া সম্ভব৷ আরে না না কোনও রহস্য গল্পের প্লট নয় একেবারে সত্যি এই ঘটনা ঘটেছে যেখানে বাবার পুরনো পাসবই খুঁজে পেয়ে প্রায় কোটিপতি হয়ে গেল ছেলে৷
বাড়ির আবর্জনার মধ্যে লক্ষ টাকার ধন খুঁজে পেয়ে চিলির এক ব্যক্তির খুশি আর ধরে রাখতে পারেননি। তবে এই গুপ্তধন হীরে বা মণি মাণিক্য ছিল না, ছিল একেবারে ক্যাশ বা নগদ৷
তার বাবার ৬০ বছরের পুরনো পাসবুক (চিলি মিলিয়ন ডলার পাসবুক)। এই পাসবুকই এই ব্যক্তিকে কোটিপতি বানিয়ে দিয়েছে৷
চিলির বাসিন্দা এক্সকুয়েল হিনোজোসা (Exequiel Hinojosa) বাড়ি পরিষ্কার করার সময় আবর্জনা পরিষ্কার করেছিলেন, সেখানেই এটা সেটা হাত দিয়ে খোঁজার সময়ে তাঁর বাবার ৬০ বছরের পুরনো ব্যাঙ্কের পাসবুক পড়ে আছে দেখতে পান। এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কথা তাঁর বাবা ছাড়া আর কেউ জানত না। তাঁর বাবাও এক দশক আগে মারা গিয়েছিলেন৷
এক্সকুয়েলের বাবা একটি বাড়ি কেনার জন্য ১৯৬০-৭০ সালে একটি ব্যাঙ্কে প্রায় ১.৪০ লক্ষ পেসো (চিলির মুদ্রা) জমা করেছিলেন। যার বর্তমান মূল্য ছিল ডলারে ১৬৩ এবং ভারতীয় টাকায় ১৩,৪৮০। এই ষাট বছরে ওই টাকা ফুলে ফেঁপে কোটি টাকায় পরিণত হয়েছে৷
ব্যাঙ্কের কথা জানতে পেরে এক্সকুয়েলের খুশিতে ডগমগ। কিন্তু এরপরেও আসল সমস্যা আসে৷ অনেক বছর আগেই সেই ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অনেকের কাছে ওই ব্যাঙ্কের পাসবুক ছিল, এত টাকা পাওয়া অসম্ভব বলে মনে হচ্ছিল। এরপরর তাঁর নজর পড়ে পাসবুকে লেখা একটি শব্দের ওপর, যাতে লেখা ছিল স্টেট গ্যারান্টিড, অর্থাৎ ব্যাঙ্ক টাকা দিতে ব্যর্থ হলে সরকার সেই টাকা ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ প্রথমে বর্তমান সরকারের কাছে টাকা চাইলে তা অস্বীকার করে।
আইনি লড়াই করা ছাড়া চিলির ওই যুবকের কোনও উপায় ছিল না। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং আদালতে তাঁর পক্ষে যুক্তি দেওয়া হয় সঞ্চিত অর্থ তার বাবার কষ্টার্জিত টাকা এবং সরকার তা ফেরত দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। যুক্তি-তর্ক শুনানি শেষে আদালত সুদ ও মহার্ঘ্য ভাতাসহ ১ বিলিয়ন পেসো অর্থাৎ ১২ লক্ষ ডলার ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যা ভারতীয় মুদ্রায় ৯৯ লক্ষ টাকা৷