প্রাপ্য বুঝিয়ে দেবেন দাদাকে! আজই ইস্তফা দিতে পারেন শেহবাজ, পাকিস্তানে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু

প্রাপ্য বুঝিয়ে দেবেন দাদাকে! আজই ইস্তফা দিতে পারেন শেহবাজ, পাকিস্তানে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু
লাহৌর: সাধারণ মানুষের কাছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক ইমরান খান  (Imran Khan)। কিন্তু তোষাখানা মামলায় এই মুহূর্তে জেলবন্দি তিনি (Pakistan Politics)। সেই আবহে পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন জোট সরকারে ইতি পড়ছে বুধবারই। আজও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন শেহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। পরবর্তী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতেই এমন পদক্ষেপ বলে জানা যাচ্ছে।

পাকিস্তান জাতীয় অ্যাসেম্বলিতে নিম্নকক্ষের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১২ অগাস্ট। তার আগে ৯ অগাস্টই সরকার ভেঙে দিচ্ছেন শেহবাজ। সেই মর্মে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে প্রতিনিধি পাঠাবেন তিনি। প্রেসিডেন্ট আলভি ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের প্রাক্তন সদস্য। তিনি সরকার ভাঙার প্রস্তাবে রাজি না হলে, সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ মেনে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকার ভেঙে দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেহবাজ আজই ইস্তফা দিতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। মঙ্গলবার রাওয়ালপিণ্ডিতে পাক সেনার সদর দফতরে গিয়েও বিদায়ী বার্তা দিয়ে এসেছেন। সেখানে প্রয়াত দেশনায়কদের শ্রদ্ধাও জানান তিনি। পরাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (PML-N) নেতৃত্বাধীন জোট সরকার আরও কিছুদিন ক্ষমতায় থাকা নিয়ে আশাবাদী ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট সরকার ভাঙার প্রস্তাবে সায় না দিতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। তাই, ১১ অগাস্টের আগে, ৯ অগাস্টই সরকার ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে প্রেসিডেন্ট রাজি না হলেও, প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

তবে নয়া সরকার গড়ে উঠলেও, শেহবাজকে ফের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখা যাবে কিনা, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। কারণ দাদা নওয়াজ শরিফকে নির্বাসন থেকে দেশে ফেরাতে তৎপর হয়েছেন তিনি। দলের দায়িত্ব তো বটেই, প্রধানমন্ত্রিত্বও তার জন্য ছেড়ে দিতে পারেন তিনি। সম্প্রতি দলের অভ্যন্তরীণ পরিষদীয় বৈঠকে তেমনই বার্তা দেন শেহবাজ। তিনি বলেন, “বিদেশ থেকে ফিরে আসবেন নওয়াজ শরিফ। চতুর্থ বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশকে ফের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি।” তাই বুধবার ইস্তফা দেওয়ার পর ফের ফিরবেন কিনা, তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।

পাকিস্তানে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে, পরবর্তী নির্বাচন করানোর দায়িত্ব পাক নির্বাচন কমিশনের। পাক সংবিধানের ২২৪ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, পাঁচ বছরের সরকারের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করানোই নিয়ম। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ শেষ হলে, অথবা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরকার পড়ে গেলে, সময় পাওয়া যায় ৯০ দিন। কিন্তু পাকিস্তানে এই মুহূর্তে নির্বাচন করানো অসম্ভব বলে মনে করছেন কেউ কেউ। কারণ নতুন করে জনগণনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেদেশে। তার জন্য চলছে সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়াও। তাতে পরবর্তী নির্বাচন করাতে ১২০ দিন সময় পাবে পাক নির্বাচন কমিশন। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানে নয়া সরকার গঠিত হতে বেশ কয়েক মাস লেগে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বর্তমান সরকার ভেঙে যাওয়ার পর পরবর্তী নির্বাচন যতদিন না হচ্ছে, তত দিন কেয়ারটেকার সরকারের হাতে থাকে ক্ষমতা। স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করানোর পরিবেশ গড়ে তোলাই মূলত লক্ষ্য় হয় ওই কেয়ারটেকার সরকারের। এ ছাডা়ও রোজকার সরকারি কাজকর্ম চালিয়ে নিয়ে যেতে হয়। নিরপক্ষে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই কেয়ারটেকার সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, যাতে নির্বাচনে কোনও রকম পক্ষপাতিত্ব না হয়। এর বাইরে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না তারা।

(Feed Source: abplive.com)