এনসিইআরটি’র সিদ্ধান্তের বিপরীতে হাঁটতে চলেছে কেরল সরকার। দক্ষিণের এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ২৩ অগস্ট তিরুবনন্তপুরমের কটন হিল স্কুলে একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির এক সেট পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করবেন। আর এই পাঠ্যপুস্তকগুলিতে রয়েছে এনসিইআরটি দ্বারা সদ্য প্রকাশিত ‘বাতিল’ পাঠ্য বিষয়গুলিও।
এপ্রিল-মে মাসেই কেরল সরকার পাঠ্যপুস্তকের কিছু অংশ মুছে ফেলার ক্ষেত্রে এনসিইআরটি-এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। এর পিছনে সন্দেহজনক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে অভিযোগও করেছিল তারা। প্রকৃত ইতিহাস ভুলিয়ে দিয়ে সংঘ পরিবার তাদের পরিকল্পনা মত ইতিহাস লিখতে চাইছে বলে অভিযোগ।
সিএম পিনারাই বিজয়ন এবং শিক্ষামন্ত্রী ভি শিভানকুট্টি উভয়ই উল্লেখ করেছিলেন যে গুজরাট দাঙ্গা, মহাত্মা গান্ধীর হত্যা এবং মুঘল সাম্রাজ্যের অবদান সংক্রান্ত অংশগুলি সংঘ পরিবারের একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ হিসাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। কেরল সরকার মানবীয় বিদ্যার বিষয়ে অতিরিক্ত বই প্রকাশ করেছে যেহেতু, মূলত মানবীয় পাঠ্যপুস্তকের বিভিন্ন অংশগুলিই বাদ দেওয়া হয়েছে। ইতিহাসের সহায়ক বইগুলিতে মুঘল ইতিহাস, শিল্প বিপ্লব, দেশভাগ, মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যু, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, জরুরি অবস্থা, ভারতে জনপ্রিয় অভ্যুত্থান ইত্যাদি তথ্য থাকবে। ফলে সে রাজ্যের পড়ুয়ারা জানতে পারবে ইতিহাস, সাহিত্যের বাদ পড়ে যাওয়া পাঠ্যগুলি।
প্রসঙ্গত করোনাকালে প্রথম সিলেবাস কাটছাঁট শুরু করে সিবিএসই বোর্ড। একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠক্রম থেকে নাগরিকত্ব, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, ধর্মনিরপেক্ষতা, দেশভাগের মতো বিষয় ছেঁটে ফেলেছিল তারা। কিন্তু করোনা কেটে গেলেও এই রোগ অব্যাহত। একের পর এক নির্দেশিকায় বাদ পড়েছে বহু গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বা জনপ্রিয় সাহিত্য । এপ্রিল মাসের নোটিশে এনসিইআরটি দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠক্রম থেকে জম্মু-কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনীতির অংশের বদলে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা, ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করার বিষয়টি যুক্ত করা হয়। অন্য দিকে যোগী রাজ্যে পাঠক্রম থেকে বাদ গিয়েছে মুঘল সাম্রাজ্যের অধ্যায়। এমতাবস্থায় কেরল সরকারের নতুন বই প্রকাশের উদ্যোগ ব্যাতিক্রমী একটি পদক্ষেপ।
(Feed Source: hindustantimes.com)