‘তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় বার বার বয়ান বদল করেছে ধৃতরা’, দাবি সরকারি আইনজীবীর

‘তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় বার বার বয়ান বদল করেছে ধৃতরা’, দাবি সরকারি আইনজীবীর
পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : পরিকল্পিত অপরাধ। তদন্তের গতি বিভ্রান্ত করতে বারবার বয়ান বদল। যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুকাণ্ডে (Jadavpur University Student Death) গ্রেফতার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এমনই সব চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে উঠে আসছে । একধাপ এগিয়ে সরকারি আইনজীবীর মন্তব্য, সফল অপরাধী, কিন্তু ব্য়র্থ অভিনেতা !

পুলিশ সূত্রে দাবি, ছাত্র-মৃত্য়ুর তদন্তেও ষড়যন্ত্রের (Conspiracy) যে চাঞ্চল্য়কর তথ্য় উঠে এসেছে, তাতে গোটা বিষয়টা পড়ুয়া নয়, অপরাধীদের কাজ বলে মনে হতে বাধ্য়। পুলিশ সূত্রে দাবি, শুরুতে মনে হচ্ছিল, ষড়যন্ত্র হয়েছে কেবল পড়ুয়া-মৃত্য়ুর পরে। গোটা ঘটনা চাপা দিতে। কিন্তু, তদন্ত এগোতেই স্পষ্ট হয়ে যায়। এক দফায় নয়, ষড়যন্ত্র হয়েছিল দু’দফায় ! পড়ুয়ার মৃত্যুর আগে ও পরে।

আর সেই ষড়যন্ত্রের চিত্রনাট্যের ছিল তিনটি অঙ্ক। দখলদারি, ভয় ও র‍্যাগিং। পুলিশ (Police) সূত্রে দাবি, গত বুধবার ওই ছাত্রের মৃত্য়ুর আগে থেকেই অন্য় ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল সিনিয়র পড়ুয়াদের একাংশ। যার উদ্দেশ্য় ছিল, মৃত পড়ুয়ার বিভাগে অন্য একটি ছাত্র সংগঠনের আধিপত্য খর্ব করা। সংশ্লিষ্ট বিভাগে অধিকার কায়েমের জন্য তারা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছিল। আর সেই ভয়ের পরিবেশ তৈরির অস্ত্রই ছিল র‍্যাগিং।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) পড়ুয়া মৃত্য়ুর ২ দিনের মাথায় ভাইরাল হয় ডায়েরির পাতায় ডিন অফ স্টুডেন্টসকে (Dean of Students) লেখা চিঠি। যেখানে লেখা ছিল, ‘আমার বিভাগের এক সিনিয়র রুদ্রদা বলে, হস্টেলে পড়ুয়াদের সিনিয়রদের কিছু কাজ করতে হয়। তারা যদি তা অমান্য করে, তাদের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।’ এরপরই প্রশ্ন ওঠে, এই ডায়েরির পাতা কি পরিকল্পনামাফিকভাবে ভাইরাল করা হয়েছে ? পুলিশ সূত্রে দাবি, তদন্তে উঠে এসেছে, ডিন অফ স্টুডেন্টসের উদ্দেশে ওই চিঠি লেখানো হয়েছিল মূলত ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতেই!

যে ছাত্রের মৃত্য়ু হয়েছে, তাকে দিয়েই নিজের বিভাগের সিনিয়রের বিরুদ্ধে ডিন অফ স্টুডেন্টসের কাছে চিঠি জমা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। যা মাত্র ৩ দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এক সাড়ে সতেরো বছরের পড়ুয়ার কাছে ছিল চূড়ান্ত মানসিক চাপ। পুলিশ সূত্রে খবর, ১০৪ নম্বর ঘরে চাপ দিয়ে চিঠিতে সই করানোর পর ওই পড়ুয়াকে আনা হয় তিন তলায়। তারপর শুরু হয় অকথ্য অত্য়াচার। এরপরই, রাত ১১.৪৫-এ চরম পরিণতি।

শুরু হয় চক্রান্তের দ্বিতীয় পর্ব। একেবারে জিবি মিটিং করে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা ও দুর্ঘটনা বলে তুলে ধরার কথা ঠিক হয়। সেই মতো ষড়যন্ত্র করে সকলে একরকম বয়ান দেয়। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্ত হোক বা ঘটনার পুনর্নির্মাণ, বারবার বয়ান বদল করছে ধৃতরা। একাধিক ঘৃণ্য় চক্রান্ত! তার জেরে এক ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্য়ু! যার জেরে কলঙ্কের দাগ লাগল যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের মতো গর্বের প্রতিষ্ঠানে। কিনতু এই চক্রান্ত করল যারা, তাদের শাস্তি হবে তো? সেই দাবিই তুলছেন সকলে।

(Feed Source: abplive.com)