কয়েকশো কিমি জুড়ে বেহাল নদী ও সমুদ্রবাঁধ, রাজনৈতিক তরজার আবহে চিন্তায় ঘুম উড়েছে সুন্দরবনবাসীর

কয়েকশো কিমি জুড়ে বেহাল নদী ও সমুদ্রবাঁধ, রাজনৈতিক তরজার আবহে চিন্তায় ঘুম উড়েছে সুন্দরবনবাসীর
গৌতম মণ্ডল, সুন্দরবন : দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Paragana) সুন্দরবনের (Sundarban) ১৬টি ব্লকের কয়েকশো কিলোমিটার জুড়ে বেহাল নদীবাঁধ (River Dam)। এনিয়ে তুঙ্গে উঠেছে শাসক-বিরোধী তরজা। সুন্দরবনের ভাঙন রুখতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন রাজ্য়ের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmik)। পাল্টা রাজ্য়ের শাসক দলের বিরুদ্ধে কাটমানি ও দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।

কোনও অংশে ভেঙে গেছে বাঁধ। কোনও অংশে বেহাল দশা বাঁধের। সুন্দরবন জুড়ে বেহাল অবস্থা বিভিন্ন নদী ও সমুদ্র বাঁধের। একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় ১৬টি ব্লকের কয়েকশো কিলোমিটার নদী ও সমুদ্রের বাঁধ। সামনের পূর্ণিমায় ষাঁড়াষাঁড়ির কোটাল। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায় নদী ও সমুদ্রের জলস্তর। ফলে, চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে সুন্দরবনবাসীর। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন দাস বলেন, “আগের থেকে এই নদীতে যেভাবে স্রোত বইছে, এই স্রোতকে না আটকালে দ্বীপ থাকবে না। দ্বীপ থাকলে জনবসতি থাকবে। জনবসতি থাকা মানে গঙ্গাসাগর মেলাও চলবে। নদীর স্রোত কমিয়ে যাতে বাঁধটাকে মজবুতভাবে বানানো যায়, তার জন্য প্রত্যেকের কাছে আবেদন করছি।”

আর এনিয়েই তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। শনিবার গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি আশ্রমের সমুদ্রতট পরিদর্শন করেন রাজ্য়ের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। রবিবার বকখালির গঙ্গা তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করলেন বিজেপির রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, “বাঁধ পরিদর্শন করে ওঁর যদি মনে এই ভাবনার উদয় হয় যে, বাঁধগুলো বাঁচানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের এগিয়ে আসা প্রয়োজন, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে সুখী আর কেউ হবেন না। আমাদের দফতর প্রস্তুত, কিন্তু প্রকৃতির সঙ্গে তো যুদ্ধ করা যাবে না।”

অন্যদিকে সুর চড়িয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “স্থানীয় মানুষ বলছেন যে, টাকা এসেছিল। সেই কাজ করার সময় এত কাটমানি দাবি করা হয় ! সঞ্চালক ৩ লক্ষ টাকা, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা ২ লক্ষ টাকা করে। যে ঠিকাদার কাজ পেয়েছিলেন তিনি লাভ হবে না জানেন। স্বাভাবিকভাবেই তিনি কাজ এখান থেকে সরিয়ে নিয়ে চলে গেছেন, কাজ আর হয়নি। এর আগে নাবার্ড কাজ পেয়েছিল। বঙ্কিম হাজরা তাঁর নিজের লোক দিয়ে ইট, বালি, সিমেন্ট, পাথর চুরি করিয়ে নিতেন। ফলে, কাজ আটকে গেছে। এরকম করলে, কেন্দ্র বার বার টাকা পাঠাবে, আর তোমরা চুরি করবে, তার জন্য় তো কেন্দ্র টাকা দেবে না।”

শাসক-বিরোধী তরজা ছাপিয়ে কবে মেরামত হবে নদীবাঁধ, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সুন্দরবনবাসী।

(Feed Source: abplive.com)