বাড়ছে টাইফয়েড, ওরাল অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ না হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি অনেকেই

বাড়ছে টাইফয়েড, ওরাল অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ না হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি অনেকেই

রাজ্যে ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেঙ্গি। শুধুমাত্র অগস্ট মাসেই রাজ্যে ১০ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। তার সঙ্গে ম্যালেরিয়া, ভাইরাল জ্বরেও কাবু হচ্ছেন বহু মানুষ। এরই মধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে টাইফয়েড। তবে এবছরের টাইফয়েড অনেক বেশি সংক্রামক। কারণ আগে ওরাল অ্যান্টিবায়োটিকেই এই রোগের জীবাণু ‘সালমোনেলা টাইফি’কে বাগে আনা যেত। কিন্তু, এবার তা সম্ভব হচ্ছে না। ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে এই জীবাণু। ফলে এই রোগে আক্রান্তের ভর্তিও বাড়ছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে অনেকে গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেন। এমনকী অন্ত্রে ফুটোও হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। ফলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে যথেষ্ঠই বেগ পেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।

এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আউটডোরে যে সমস্ত টাইফয়েড রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে তাদের মধ্যে গত দেড় মাসে প্রায় অর্ধেক আক্রান্তকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, টাইফয়েডের জন্য যেসব অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে রোগীরা তা বাড়িতে খাচ্ছেন। তার মধ্যে রয়েছে ক্লোরামফেনিকল বা সিপ্রোফ্লক্সাসিন ট্যাবলেট। কিন্তু, তাতে কাজ হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। তারপরে ইন্ট্রাভেনাস সেফট্রিয়াক্সোন, এমনকী মেরোপেনমের মতো অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ৫ দিন ওরাল অ্যান্টিবায়োটিকের বদলে ১৫ দিন ইন্ট্রাভেনাস অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের মতে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণেই টাইফয়েড বাড়ছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সাধারণত বর্ষাকালে টাইফয়েড এমনিতেই বাড়ে। তবে এ বছর টাইফয়েড বেশি হচ্ছে। আর তারফলে যেমন লিভারে সমস্যা বাড়ছে তেমনি মস্তিষ্কেও প্রভাব পড়ছে।

সাধারণত টাইফয়েডে প্রায় একসপ্তাহ জ্বর থাকে। তবে প্রথম ৫ দিন এই জ্বরে লাগাতার শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। যার ফলে বমি ভাব, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, শরীরে দুর্বলতা থাকে। সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকেই সেরে যায় টাইফয়েড। কিন্তু, এবার পাঁচ দিন অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েও জ্বর কমছে না। এমনকী সেফালোস্পোরিনের মতো অ্যান্টিবায়োটিকেও অনেকের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এই অবস্থায় চিকিৎসকদের পরামর্শ তিন চার দিন জ্বর থাকলেই ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া এবং টাইফয়েড–এর পরীক্ষা করাতে হবে। তারপরে সেই মতো অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, যাদের ওরাল অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ হচ্ছে না মূলত তারাই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

(Feed Source: hindustantimes.com)