উপাচার্য-নিয়োগ নিয়ে তুঙ্গে রাজ্য় সরকার-রাজ্য়পাল সংঘাত। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রাশ কার হাতে থাকবে? রাজভবনের জারি করা বিজ্ঞপ্তি নিয়ে, চরমে পৌঁছেছে চাপানউতোর। কিন্তু তার মধ্য়েই রবিবার মধ্য়রাতে, বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের উপাচার্যহীন ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে, অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করলেন সিভি আনন্দ বোস। সম্প্রতি রাজ্যপাল ঘোষণা করেন, রাজ্যের উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে, প্রয়োজন পড়লে উপচার্যের ভূমিকা পালন করবেন তিনিই। রবিবার রাতেই, রাজভবনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করা হচ্ছে।
এরমধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। অর্থাৎ একই সঙ্গে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। আবার, সংস্কৃত বিশ্ববিদ্য়ালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য রাজকুমার কোঠারি, অতিরিক্ত হিসেবে, বারাসাতের ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের দায়িত্ব পাচ্ছেন। অর্থাৎ, একই সঙ্গে এই দুটি বিশ্ববিদ্য়ালয়ের উপাচারযের দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে, দেবব্রত বসু। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির অন্তর্বর্তী উপাচার্য হচ্ছেন তপন চন্দ।বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন গৌতম চক্রবর্তী। পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে, শ্যামসুন্দর দানা। এছাড়া, রানি রাসমণি গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়, দার্জিলিং বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ মহাত্মা গাঁধী বিশ্ববিদ্যালয়, সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়, হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়, কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছেন রাজ্য়পাল।
সম্প্রতি উচ্চশিক্ষার নানা বিষয় নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের টানাপোড়েন চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আর্থিক বিষয় সম্পর্কে উপাচার্যদের নিয়মিত রিপোর্ট চেয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজভবন।অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীকে, আচার্য করতে বিধানসভায় বিল পাস করায় রাজ্য সরকার। সম্প্রতি, আচার্য-রাজ্যপাল বোস, ৮টি বিশ্ববিদ্য়ালয়ে নতুন অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেন। ৩ জন উপাচার্যের মেয়াদ বৃদ্ধির নির্দেশ দেন । যাকে বেআইনি বলে আখ্যা দেয় সরকারপক্ষ।উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে দ্বন্দ্বের জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। যার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করে,আচার্য-রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকার, উভয়পক্ষকেই তাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেয় সর্বোচ্চ আদালত। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থই যে সবার আগে, তাও বোঝায় সুপ্রিম কোর্ট।এরইমধ্যে টানাপোড়েন শনিবার নতুন মাত্রা পায় রাজভবনের এক বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে।
শনিবার রাজ্যপালের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারির সই করা এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, উপাচার্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল এগজিকিউটিভ অফিসার। তাঁর নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালিত হবে।রেজিস্ট্রার-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা, উপাচার্যর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবেন। উপাচার্যর সম্মতি ছাড়া, সরাসরি রাজ্য সরকারের কোনও নির্দেশ মানতে বা কার্যকর করতে তাঁরা বাধ্য নন।এই মারাত্মক সংঘাতের মধ্য়েই, উপাচার্যহীন ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে, অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করলেন সিভি আনন্দ বোস।
(Feed Source: abplive.com)