এড়ানো গেল না বিপদ, মুম্বই-থানতে ‘দহি হান্ডি উৎসবে’ জখম ১২৪

এড়ানো গেল না বিপদ, মুম্বই-থানতে ‘দহি হান্ডি উৎসবে’  জখম ১২৪
মুম্বই: ‘কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী’ (Janmashtami 2023) বলে কথা, ‘দহি হান্ডি উৎসব’ (Dahi Handi Festival) হবে না? তা হলে তো অর্ধেক আনন্দই মাটি। কিন্তু সেই আনন্দ করতে গিয়েই মুম্বইয়ে (Mumbai) জখম হলেন অন্তত ১০৭ জন ‘গোবিন্দা’। লাগোয়া থানে শহরে আহত ১৭ জন। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার মুম্বই ও থআনাকে আহতের সংখ্যা ১২৪।

‘দহি হান্ডি উৎসব’… 
মুম্বই, পুনে ও গুজরাতের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে জন্মাষ্টমী ও ‘দহি হান্ডি উৎসব’ কার্যত একে অন্যের পরিপূরক। প্রত্যেক বছর, শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসব উপলক্ষ্যে পুজো-অর্চনার পাশাপাশি অনেক উঁচুতে বেঁধে রাখা দই ও মাখনের হাঁড়ি ভাঙার খেলাতে সামিল হন অনেকে। একে অন্যের পিঠে চড়ে লম্বা ‘হিউম্যান পিরামিড’ তৈরি করা ও শেষমেশ দইয়ের হাঁড়ি ভাঙা, এটিই ‘দহি হান্ডি উৎসবের’ মূল ইউএসপি। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে-সহ একাধিক বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, বলি-তারকারা এই উৎসবের সাক্ষী ছিলেন এবারও। তুমুল বর্ষণের মধ্যেই শুরু হয় ‘দহি হান্ডি উৎসব’। চলে সন্ধে পর্যন্ত। বাণিজ্যনগরীর বিভিন্ন প্রান্তে এই নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। পুরস্কার হিসেবে নগদেরও ব্য়বস্থা করা হয়। অর্থাৎ যে ‘গোবিন্দার’ দল সফল ভাবে দইয়ের হাঁড়ি ভাঙতে পারবে, তাঁরা নগদ পুরস্কার পারবে। কিন্তু ‘হিউম্যান পিরামিড’ তৈরির সময় পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকেই। অংশগ্রহণকারীরা পড়ে গিয়ে আঘাত পেতে পারেন, পেয়েও থাকেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। মুম্বই প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘মুম্বইয়ে অন্তত ১০৭ জন গোবিন্দা জখম হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জন সরকারি ও পুর হাসপাতালগুলিতে ভর্তি। ৬২ জনকে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ৩১ জনকে ওপিডি-তে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।’ তবে এই ধরনের দুর্ঘটনার জন্য তৈরি ছিল বৃহমুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন।

কোথা থেকে শুরু???
‘দহি হান্ডি উৎসবের’ পিছনে একটি সুন্দর গল্প রয়েছে। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, মাখন ও দই (দহি) ছিল শ্রীকৃষ্ণের বড় প্রিয়। ছোটবেলায় তাই মাখন এবং দই চুরি করে খেতেন বালগোপাল। এই নিয়ে তিতিবিরক্ত গ্রামবাসীরা যশোদার কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন। তাতে বিস্তর বকুনি খেয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।শুধু তাই নয়। তাঁর হাত থেকে মাখন ও দই বাঁচাতে যশোদা-ই গ্রামবাসীদের বুদ্ধি দেন, মাটির পাত্রে সেগুলি এমন উঁচুতে ঝুলিয়ে রাখা হোক যাতে খুদে ছেলেপিলের হাত সেই পর্যন্ত না পৌঁছয়।কিন্তু এভাবে কি আর বালগোপালকে আটকানো যায়? তখনই নতুন বুদ্ধি বের করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। বন্ধুদের নিয়ে একটি ‘পিরামিড’ তৈরি করে ফেলেন। মানুষকে নিয়ে তৈরি ওই পিরামিডের মাথায় উঠে মাখন ও দইয়ের হাঁড়ি ভাঙাই ছিল এসবের মূল লক্ষ্য। সেখান থেকে চলে আসছে এই ‘দহি হান্ডি উৎসব’। যাঁদের নিয়ে ওই ‘পিরামিড’ তৈরি হয়, তাঁদের বলা হয় ‘গোবিন্দা’। আর যিনি সকলের পিঠে উঠে, দই বা মাখনের হাঁড়ি ভাঙতে পারেন তাঁকে পুরষ্কৃত করেন আয়োজক কমিটির সদস্যরা।

(Feed Source: abplive.com)