
কলকাতা : ফের নজির গড়ল কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। সরকারি এই হাসপাতালে করা হল জটিল অস্ত্রোপচার। ৬৫ বছরের বৃদ্ধর গলব্লাডার থেকে বার করা হল ১৩৬৪ টি পাথর। এছাড়াও ওই ব্যক্তির শরীরে ছিল একাধিক রোগ। এই সব সমস্যা থাকা সত্ত্বেও অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা।
পূর্ব মেদিনীপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা বছর ৬৫ অশোক গুছাইত। বেশ কিছু দিন যাবত তীব্র পেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন তিনি। নিকটবর্তী বেশ কিছু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি। অবশেষে তিনি আসেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আসার পর প্রথমে তিনি ওপিডি বিভাগে দেখান। সেখানেই চিকিৎসকদের পরামর্শের তাঁর আলট্রাসোনোগ্রাফি করা হয়।
সেই রিপোর্টে দেখা যায় তাঁর গলব্লাডারে রয়েছে একাধিক স্টোন। যা দেখে রীতিমতো অবাক চিকিৎসকরা। তাই দেরি না করে শুরু হয় অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি। ৮ সেপ্টেম্বর অশোকবাবুর অস্ত্রোপচার হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে অস্ত্রোপচার করেন সার্জারি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক শিবজ্যোতি ঘোষ। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর শরীর থেকে বার হয় প্রায় ১৩৬৪ টি স্টোন। চিকিৎসক বলেন, “এত পরিমাণে স্টোন শরীরে হয়েছিল। তবে এনার ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারটা একটু জটিল ছিল। কারণ ওনার কিডনি, সুগার এবং প্রেশার তিনটেরই চিকিৎসা চলছিল। এমনকি যে কোনও সময়ে ওই স্টোন পিত্তথলি থেকে পিত্তনালিতে ঢুকে যেত। তখন বিপদ আরও বাড়ত।”
বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ ওই বৃদ্ধ। শুক্রবার ল্যাপরোস্কোপি অস্ত্রোপচারের পর সোমবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। চিকিৎসক শিবজ্যোতি ঘোষ ছাড়াও তাঁর দলে ছিলেন প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায়, সুমন সাহা, সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য-সহ একাধিক ডাক্তার। কিন্তু এতগুলো স্টোন কেন? সেই বিষয়ে চিকিৎসকদের মত, গলব্লাডারের একটা স্টোন যে কারণে হয় ঠিক ওই কারণেই একাধিক স্টোন হতে পারে। কিছু কিছু মানুষের শারীরিক কারণের উপর ভিত্তি করেই স্টোনের সংখ্যা বাড়ে।