Team India | Asia Cup 2023: ২১৩ করেও জিততে পারে ভারত! রেলায় ফাইনালে রোহিতরা

Team India | Asia Cup 2023: ২১৩ করেও জিততে পারে ভারত! রেলায় ফাইনালে রোহিতরা

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আধুনিক ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি ফরম্য়াটেও ২১৩ রান করে নিশ্চিন্তে থাকা যায় না, এই রানও তাড়া ম্য়াচ বার করার প্রচুর নজির রয়েছে। সেখানে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ২১৩ তো কোনও রানই নয়, কিন্তু দলটার নাম যে ভারত। এত কম রানের পুঁজি নিয়েও ম্য়াচ বার করার বুকের পাটা আছে রোহিত শর্মা অ্যান্ড কোংয়ের। শ্রীলঙ্কাকে ৪১ রানে হারিয়ে ভারত চলে গেল এশিয়া কাপের ফাইনালে  (IND vs SL | Asia Cup 2023)। অঙ্ক কষে, বুদ্ধি খাটিয়ে জেতার অসাধারণ দৃষ্টান্ত রাখল টিম ইন্ডিয়া। এই জয়ের একমাত্র জ্বালানি ভারতীয় দলের আত্মবিশ্বাস আর শেষ পর্যন্ত হাল না ছাড়ার মানসিকতা।

এবার আসা যাক ম্য়াচের প্রসঙ্গে, দুনিথ নেথমিকা ওয়েলালাগে। এই নামটা দিয়েই শুরু করতে হবে ম্য়াচের গল্প। ২০ বছরের শ্রীলঙ্কার স্পিনার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটি মাত্র বছর কাটিয়েছেন। খেলার অভিজ্ঞতা বলতে একটি টেস্ট, ১৩টি ওয়ানডে। বাইশ গজ তাঁর নামও জানত না ঠিক করে। তবে মঙ্গলবার কলম্বোয় ওয়েলালাগে যা করলেন, এবার থেকে তিনি মাঠে নামলে তাঁর দিকেই থাকবে নজর। শ্রীলঙ্কার আর প্রেমাদাসা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল ভারত ২২৮ রানে পাকিস্তানকে হারিয়ে লিখেছিল ইতিহাস! আর ঠিক সেই মাঠেই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভারতের ইনিংস শেষ হয়ে যায় মাত্র ২১৩ রানে। সৌজন্যে অবিশ্বাস্য ওয়েলালাগে। ১০ ওভার বল করে একাই তুলে নেন পাঁচটি উইকেট। খরচ করলেন মাত্র ৪০ রান। ওয়েলালাগের শিকার হলেন যাঁরা, তাঁরা প্রত্যেকেই মহারথী ব্য়াটার। এদিন  ওয়েলালাগের ঘূর্ণিতে নাস্তানাবুদ হলেন রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, কেএল রাহুল ও হার্দিক পাণ্ডিয়া! বাকি চার উইকেট তুলে নিলেন চরিথ আশালঙ্কা। এক উইকেট মহেশ থিকসানার।

এদিন টস জিতে ভারত ব্য়াটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। শুরুটা দারুণ করেছিলেন রোহিত-শুভমন। ১১.১ ওভারে তাঁদের ব্যাট থেকে আসে ৮০ রান। ২৫ বলে ১৯ রান করে শুভমন ক্লিন বোল্ড হয়ে যান ওয়েলালাগের বলে। শুভমনকে দিয়ে ভারতের পতনের শুরু। এরপর রোহিত (৪৮ বলে ৫৩), বিরাটকেও (১২ বলে ৩) গিলে নেন তরুণ স্পিনার। ১৬ ওভারের মধ্যে ৯১ রানে ভারতের টপ অর্ডার ফিরে যায় সাজঘরে। এরপর ঈশান কিশান ও কেএল রাহুল কিছুক্ষণ ক্রিজে থাকেন। স্কোরবোর্ডে ৮৯ বলে ৬৩ রান যোগ করেন তাঁরা।

এরপর রাহুলও সেই ওয়েলালাগের ফাঁদে পা দিয়ে দেন। ৪৪ বলে ৩৯ রানে গত ম্যাচের সেঞ্চুরিকারীকে ফিরতে হয়। একেবারে কোহলিকে যে বলে আউট করেছিলেন, সেই বলেই রাহুলকে ফেরালেন ওয়েলালাগে। কট অ্যান্ড বোল্ডে লেখা হল তাঁর নামই। এরপর ঈশানও ফেরেন ৬১ বলে ৩৩ রান করে। আশালঙ্কার বলে ওয়েলালাগের হাতে ক্য়াচ তুলে দেন ঈশান। এরপর হার্দিক পাণ্ডিয়া ও রবীন্দ্র জাদেজার উপরেই ভরসা করেছিল ভারতীয় দল। কিন্তু এদিন সুপারফ্লপ হার্দিক-জাদেজা। দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠতে পারলেন না মিডল অর্ডারের দুই সুপারস্টার। হার্দিককে (৫) ওয়েলালাগে ও জাদেজাকে (৪) আশালঙ্কা ড্রেসিংরুমে পাঠান। আটে নেমে অক্ষর প্য়াটেল চেষ্টা করেছিলেন শেষ পর্যন্ত থাকতে। তিনি ২৬ করেন ৩৬ বলে।

ভারতের এই রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কার শুরুটাই কিন্তু হয়েছিল একেবারে অনভিপ্রেত সুরে! আট ওভারের মধ্য়ে ২৫ রানে ড্রেসিংরুমে ফিরে যায় টপ অর্ডার। সৌজন্য়ে জসপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ সিরাজ। বুমরা দু’টি ও সিরাজ তুলে নেন একটি উইকেট। এরপর ৭৩ রানে চলে যায় পাঁচ উইকেট। কুলদীপ যাদব পরের দুই উইকেট তুলে নেন। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে ভীষণ ভাবে মনে হচ্ছিল যে, ভারত এবার আরামসে ম্য়াচ বার করে নেবে। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় শ্রীলঙ্কাকে জেতানোর দায়িত্বটা কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন সেই ওয়েলালাগে ও ধনঞ্জয় ডি সিলভা। ৭৫ বলে তাঁরা ৬৩ রানের যুগলবন্দি করেন। রীতিমতো ভারতীয় বোলারদের শাসন করতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। রোহিতরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলছিলেন এই জুটি ভাঙার জন্য়। সেই স্য়র জাদেজা এসে আউট করেন ধনঞ্জয়কে। ৬৬ বলে তাঁর লড়াকু ৪১ রানের ইনিংস শেষ হয়ে যায়। এর সঙ্গেই শ্রীলঙ্কার জয়ের আশাও। ওয়েলালাগেকে সঙ্গ দেওয়ার মতো আরও একজনও ছিলেন না এদিন। বাকিরা এলেন আর ফিরে গেলেন। ৪২ নম্বর ওভারে এসে কুলদীপ পরপর এক বল অন্তর জোড়া উইকেট তুলে শ্রীলঙ্কাকে হোটেলে ফেরার রাস্তা দেখিয়ে দেন। এর সঙ্গেই তিনি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ফরম্য়াটে ১৫০ উইকেটও নিয়ে ফেলেন। তবে পাঁচ উইকেট ও অপরাজিত ৪২ রানের ইনিংস খেলে ওয়েলালাগে হৃদয় জিতে নিলেন।

(Feed Source: zeenews.com)