জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিট্যাল ব্যুরো: বাইপাসের ধারের এক পাঁচতারা হোটেল হয়ে গেল আসন্ন ইন্ডিয়ান সুপার লিগের মিডিয়া ডে (ISL Media Day)। মোদ্দা কথায়, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আইএসএলে অংশ নেওয়া নির্বাচিত দলের কোচ ও ফুটবলারদের কথোপকথন সারার একটা দিন। প্রায় ছয় ঘণ্টার বেশি সময়ে ধরে চলা এই ইভেন্টের শেষ দিকে ছিল গতবারের চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan Super Giant)। পাল তোলা নৌকার হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ছিলেন কোচ জুয়ান ফেরান্দো, অধিনায়ক শুভাশিস বসু, দিমিত্রি পেত্রাতোস ও কিয়ান নাসিরি। ফেরান্দো কথা বললেন একাধিক বিষয় নিয়ে।
ফেরান্দোর কাছে শুরুতেই প্রশ্ন ছিল, কিংস কাপ খেলতে গিয়ে চোট পাওয়া উইঙ্গার আশিক কুরুনিয়ানকে নিয়ে। লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছে তরুণ ফুটবলারের আশিকের ঘটনায় হৃদয় ভেঙেছে বাগান কোচের। এদিন ফেরান্দো বলেন, ‘দেখুন, আশিকের বিষয় জানি না। ডাক্তারের থেকে জানতে হবে। ওর চোটে আমি হতাশ। আমি জানি না কত দ্রুত ও সেরে উঠবে। আমার কাছে দলের সকলেই গুরুত্বপূর্ণ। আশিকের ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। স্ক্যানের রিপোর্ট আসার পর বুঝতে পারব। ওর চোট খতিয়ে দেখেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এএফসি এবং আইএসএল। জোড়া বড় টুর্নামেন্ট। আইএসএল জয়ের পর ডুরান্ডও জিতেছে সবুজ-মেরুন। সমর্থকদের বিরাট প্রত্যাশার চাপ। কীভাবে এই চাপ দেখছেন? ‘প্রতিটি ম্যাচ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। দল তৈরি হয়ে গিয়েছে। নতুন মরসুমের জন্য আমরা প্রস্তুত। ডুরান্ড জিতে আমরা খুশি হয়েছি ঠিকই, ডুরান্ড এখন অতীত। সামনের দিকে তাকাতে চাই।’
মোহনবাগান ছাড়া আর কোন কোন দলকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছেন বাগান কোচ? ট্রফি ধরে রাখা কি কঠিন? কী ভাবছেন তিনি? ফেরান্দো বলছেন, ‘ওড়িশার ভালো ফুটবলার রয়েছে। মুম্বই খুব শক্তিশালী। গোয়া বেশ ভালো। আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে দশ দলই প্ৰথম স্থান নেওয়ার জন্য লড়াই করবে। আমার মতে অনেক দলই বেগ দেবে। আমাদের দলের জন্য ট্রফি ধরে রাখা কঠিন হবে। মোহনবাগানের মতো এর বড় ক্লাবে ট্রফি জেতার চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই।’
দলে হাবাসের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ছিল ফেরান্দোর কাছে। তিনি হাবাসের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘হাবাস এই লিগের ব্যাপারে প্রচুর কিছু জানেন। ও সংস্কৃতিটা বোঝে। ওর সঙ্গে প্লেয়ার থেকে শুরু করে ফুটবল নিয়ে প্রতিদিন আলোচনা হয়। এছাড়াও অনেক কিছু নিয়ে আমরা কথা বলি। আমার ওর সঙ্গে ফুটবল নিয়ে কথা বললে অনেক সুবিধা হয়। আসলে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি এই মোহনবাগান দলটার জন্য।’
প্রীতম কোটালের ক্লাব ছাড়ার পর অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড এখন শুভাশিস বসুর হাতে। মোহনবাগানের ১৭ নম্বর ডুরান্ড জয়ী অধিনায়ক হিসেবে তাঁর নাম ইতিহাসে লেখা থাকবে। নতুন অধিনায়কের কাছে প্রশ্ন ছিল ক্লাব বনাম দেশের এই লড়াইটা তিনি কী ভাবে দেখেন? শুভাশিস বলেন, ‘যত বেশি ম্যাচ খেলা যায় তত ভালো। সব ম্যাচ খেলার চেষ্টা করি। এটা আমাকে আরও উন্নত করে। সবসময় মাঠে ১০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করি। সেটা ক্লাব হোক বা দেশ। অধিনায়ক হিসেবে ট্রফি জিতেছি। সেরা ডার্বি খেলার সাক্ষী থেকেছি। আইএসএল আমাদের প্রধান টার্গেট। আশা করি আবার ট্রফি জিততে পারব।’
১০ জনে খেলেও ডুরান্ড ছিনিয়ে নিয়েছে সবুজ-মেরুন! দিমিত্রি পেত্রাতোস নিভিয়ে দিয়েছিলেন লাল-হলুদ মশাল। তাঁর একমাত্র গোলেই মোহনবাগান জেতে ডুরান্ড। দিমিত্রি হয়ে গিয়েছেন মোহনবাগানের নতুন তারকা। দিমিত্রির কাছে প্রশ্ন ছিল যে, এএফসি-র সঙ্গেই খেলতে হবে আইএসএল। তিনি কীভাবে দেখছেন বিষয়টা? দিমিত্রি বলেন, ‘বেশি ম্যাচ খেলতে পারলে ভালোই হয়। চোট-আঘাত থেকে দূরে থেকে ম্যাচ ধরে ধরে ভাবি।’ এখন দেখার ৭০ কোটি টাকার উপর খরচ করে, আগুনে স্কোয়াড বানানো ক্লাব কি ট্রফি ধরে রাখতে পারে কিনা!
(Feed Source: zeenews.com)