আপনিও যদি বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন, তাহলে আপনার দিল্লিতে মির্জা গালিবের প্রাসাদে যাওয়া উচিত। এখানে আপনি মির্জা গালিবকে বোঝার ও জানার সুযোগ পাবেন। আমরা আপনাকে বলি যে গালিবের কবিতা একটি নেশার মতো। একজন যত বেশি পড়বে, তত কম।
দিল্লিতে বসবাসকারী একজন বিখ্যাত কবি, যিনি ব্রিটিশ ও মুঘল আমলে নিজের নাম এত বিখ্যাত করেছিলেন যে মানুষ এখনও তাকে স্মরণ করে। এই কবি তার স্পষ্টভাষী কবিতার জন্য পরিচিত। আমরা আপনাকে বলি যে আমরা মির্জা গালিবের কথা বলছি। বলা হয় গালিবের কবিতা নেশার মতো। একজন যত বেশি পড়বে, তত কম। গালিবের কবিতা ব্যবহার করে প্রেম-ভালোবাসার গল্প লেখা যায়।
বলে রাখি কোথাও গালিবের কবিতার বেদনা ছিল তাঁর জীবনের গল্প। গালিব কি হাভেলিতে তার কষ্ট দেখতে পাবেন। আপনিও যদি শাহেনশাহ মির্জা গালিবকে বুঝতে ও জানতে চান। তাই আপনাকে একবার গালিব কি হাভেলি ঘুরে দেখতেই হবে। এই প্রাসাদটি এখন জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়েছে। কথিত আছে, গালিব জীবনের শেষ রাত কাটিয়েছিলেন বলিমরানের এই প্রাসাদে।
গালিব কি হাভেলির ইতিহাস
আসলে কবি গালিব ছিলেন আগ্রার বাসিন্দা। তিনি 1797 সালে কালা মহল নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু মাত্র ১১ বছর বয়সে দিল্লি আসেন তিনি। এরপর 1812 সালে গালিব উমরাও বেগমকে বিয়ে করেন। দিল্লি সেই একই জায়গা যেখানে আসাদুল্লাহ বেগ খান গালিব নামে কবিতা লিখতে শুরু করেছিলেন। তাই বলা হয় গালিবের জন্ম দিল্লিতে। কিন্তু এই প্রাসাদটি 19 শতকে গালিবের থাকার জায়গা ছিল। তিনি এই প্রাসাদ কেনেননি। বরং উপহার হিসেবে পেয়েছেন এই প্রাসাদ। কথিত আছে, গালিব তার শেষ বছরগুলো এই বাড়িতেই কাটিয়েছেন।
প্রাসাদের বিশেষত্ব
গালিবের প্রাসাদে, আপনি কেবল তাঁর কবিতাই নয়, গালিবের জীবনের সাথে সম্পর্কিত জিনিসগুলিও দেখার সুযোগ পাবেন। প্রাসাদের ভেতরে গেলেই দেখা মিলবে মার্বেল মূর্তির ওপর রাখা গালিবের অনেক বই। এ ছাড়া গালিব ও তার পরিবারের ব্যবহৃত বাসনপত্র, আনুষাঙ্গিক এবং কাপড় কাচের ফ্রেমে দেখানো হয়েছে। এছাড়া প্রাসাদের বারান্দায় গালিবের চিত্রকর্ম রয়েছে। এই চিত্রকর্মে তাকে হুক্কা ধূমপান করতে দেখানো হয়েছে।
শায়রি পাওয়া যাবে প্রাসাদের দেয়ালে
গালিবের প্রাসাদের দেয়ালে উর্দু ও হিন্দিতে লেখা কবিতা রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য বিখ্যাত কবিদের ছবিও এখানে রয়েছে। এই প্রাসাদে আপনি ওস্তাদ জাউক, হাকিম মমিন খান মমিন এবং আবু জাফর প্রমুখের ছবি দেখতে পাবেন। এ কারণে প্রতি বছর ২৭শে ডিসেম্বর গালিবের জন্মদিন উপলক্ষে এই প্রাসাদে মুশায়রার আয়োজন করা হয়। এছাড়া ২০১৮ সালে এই প্রাসাদে রক্ষিত গালিবের মূর্তি উদ্বোধন করা হয়। গালিবের এই মূর্তিটি তৈরি করেছেন বিখ্যাত ভাস্কর রামপুরে।
গালিবের প্রাসাদ একটি জাতীয় ঐতিহ্য
ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ গালিবের হাভেলিকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই প্রাসাদে উপস্থিত প্রতিটি জিনিস এবং গল্প সুরক্ষিত রাখা হয়েছে। আপনি এখানে গালিব সম্পর্কে আকর্ষণীয় জিনিস জানতে পারেন। যেমন কবিতা ছাড়া তার কী শখ ছিল এবং গালিব কী খেতে পছন্দ করতেন ইত্যাদি।
মির্জা গালিবের প্রাসাদ কোথায়?
দিল্লির চাঁদনি চক সংলগ্ন অঞ্চল বালিমারনের গোলকধাঁধার মতো রাস্তার মধ্যে কাসিম জান নামে একটি রাস্তা রয়েছে। ওই রাস্তায় মসজিদের কাছেই মির্জা গালিবের প্রাসাদ। এই প্রাসাদটি দেখা আপনার জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা হতে পারে। সোমবার এবং সরকারি ছুটির দিনে এই প্রাসাদটি বন্ধ থাকে। বাকি সময়ে আপনি সকাল 11 টা থেকে 6 টা পর্যন্ত এই প্রাসাদটি দেখতে আসতে পারেন। এই প্রাসাদ দেখার জন্য কোন টিকিটের প্রয়োজন নেই।
(Feed Source: prabhasakshi.com)