আজ নয়া সংসদ ভবনে শুরু হতে চলেছে লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন। তার আগে গতকালই শেষবারের মতো অধিবেশন বসে পুরনো ভবনে। আর আজ সকালে পুরনো সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে উভয় কক্ষের সাংসদরাই জড়ো হন। সেখানে লোকসভায় বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতা হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধীর চৌধুরী। সরাসরি রাজনীতির কথা না বললেও দেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দিলেন অধীর চৌধুরী।
আজ সেন্ট্রাল হলে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত দেশের তকমা অর্জন নির্ভর করছে আমাদের দেশের নাগরিকদের উন্নয়নের উপর।ভারতে উচ্চ বেকারত্বের হার আমাদের জনসংখ্যাগত সুবিধা লাভের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের যুব জনসংখ্যাকে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়নে যথেষ্ট অবদান রাখতে সক্ষম করতে হবে। এটা অপরিহার্য।’
অধীর আজ আরও বলেন, ‘ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়া সত্ত্বেও আমাদের মাথাপিছু জিডিপি উন্নত দেশগুলির তুলনায় অনেক পিছিয়ে। এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজন উন্নয়ন সমর্থক নীতি, নিম্ন মুদ্রাস্ফীতি, সুদের হার কমানো, বেকারত্ব দূরীকরণ, দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তোলা, ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি। এছাড়া মানুষের মধ্যে পণ্যের চাহিদা বাড়াতে হবে এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা ও শিক্ষা খাতের আরও উন্নতি প্রয়োজন।’
এর আগে গতকাল লোকসভায় নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের পর কংগ্রেসের হয়ে বলতে উঠেছিলেন অধীর। গতকাল অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আজকের এই পুরনো সংসদ ভবন থেকে সরে যেতে হবে আমাদের। এটা সবার জন্য সত্যিই একটি আবেগঘন মুহূর্ত। আমরা সবাই আমাদের পুরনো সংসদ ভবনকে বিদায় জানাতে এখানে উপস্থিত হয়েছি। পণ্ডিত নেহরু বলেছিলেন যে সংসদীয় গণতন্ত্রে অংশ নিতে হলে অনেক গুণের প্রয়োজন। যোগ্যতা, কাজের প্রতি নিষ্ঠা এবং স্ব-শৃঙ্খলা থাকা প্রয়োজন।’
অধীর আরও বলেন, ‘পণ্ডিত নেহরু সংসদে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা উপভোগ করতেন। তাও তিনি অক্লান্ত ভাবে বিরোধীদের কণ্ঠস্বর শুনতেন। তিনি বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় কখনও ঠাট্টা করেননি বা বিভ্রান্ত করেননি। এমনকী তাঁর বক্তৃতার সময় স্পিকারের ঘণ্টাও বাজত। জওহরলাল নেহরু তাঁর সময় অতিক্রম করলেই সেই ঘণ্টা বাজত। সংসদে বক্তৃতা করার সময় সময়সীমা মানতেন তিনি। তিনি সংসদের অবমাননা করতে চাননি। এটাই ছিল ভারতে সংসদীয় গণতন্ত্রের বিকাশে নেহরুর অবদান।’ এদিকে ভারত বনাম ইন্ডিয়া নাম বদল বিতর্ক প্রসঙ্গে গতকাল মোদী সরকারকে বিঁধেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘চন্দ্রযান নিয়ে আলোচনা চলছিল এই সংসদে। আমি বলতে চাই, ১৯৪৬ সালে জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে পরমাণু গবেষণা কমিটি গঠিত হয়েছিল। সেখান থেকে আমরা এগিয়ে গিয়ে ১৯৬৪ সালে ইসরো গড়ে তুলি। কিন্তু আজকে আমরা ইসরোকে কী বলে ডাকব? এই ভারত, ইন্ডিয়া ইস্যু কোথা থেকে উঠে এল আজ?’
(Feed Source: hindustantimes.com)