পুরনো সংসদভবনের বিদায় বেলাতেও অব্যাহত রইল রাজনীতি। পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে সেন্ট্রাল হলের অনুষ্ঠান থেকে নাম না করে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদি ? বললেন, অনেক সম্ভাবনা সত্ত্বেও এখনও পিছিয়ে দেশের পূর্ব ভাগ। আর, এনিয়েই জল গড়াল রাজনীতির ময়দানে।
রাজ্য সরকারের পরিসখ্যান অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে নথিভুক্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ৩৮ লক্ষ। সম্প্রতি মিজোরামে রেলের নির্মীয়মাণ সেতু ভেঙে একাধিক বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্য়ু হয় ! ২০১৭ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, গোটা দেশে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি। করোনাকালে লকডাউনের সময় তাঁদের অনেককেই চরম দুর্দশার শিকার হতে হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই এবার নরেন্দ্র মোদির মুখে উঠে এল পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা। পূর্বের কথা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যেভাবে সমাজ ব্যবস্থায় সামাজিক ন্যায়ের প্রয়োজন, ঠিক তেমনই রাষ্ট্র ব্যবস্থাতেও সামাজিক ন্যায়ের প্রয়োজন। যদি দেশের কোনও অংশ পিছিয়ে থাকে, অনুন্নত থেকে যায়, এটাও সামাজিক ন্যায়ের পরিপন্থী। দুর্ভাগ্যের বিষয় হল দেশের পূর্ব এলাকা, ভারতের পূর্ব ভাগ, যেটা সম্পদে পরিপূর্ণ সেখানকার যুবকদের রোজগারের জন্য অন্য এলাকায় যেতে হচ্ছে, এই পরিস্থিতি আমাদের বদল করতেই হবে।”
পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূল বিধায়ক ও নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “আপনি ২ কোটি চাকরি বলেছিলেন। সেটা আপনারা পূরণ করেননি। আপনারা তো বঞ্চিত করেছেন। MGNREGA-র সঙ্গে যুক্ত আছেন অনেকে। তাহলে এটা কেন বন্ধ হল ? রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। এটা বন্ধ করে মাইগ্রেশনে বাধ্য করলেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ ভারত পঞ্চম অর্থ ব্য়বস্থায় পৌঁছেছে। আমি বিশ্বাসের সঙ্গে বলছি, কিছু লোকের নিরাশা থাকতেই পারে, কিন্তু ভারত টপ থ্রিতে পৌঁছবেই। আমি আত্মনির্ভর ভারত বানানোর লক্ষ্য় সবার আগে পরিপূর্ণ করতে চাই।”
লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে। খাবার, মাথার ওপর ছাদ, স্বাস্থ্য় – বেঁচে থাকার এই মৌলিক অধিকারগুলি উন্নত দেশ হওয়ার জন্য় প্রয়োজন। বেকারত্ব এখানে উল্লেখযোগ্য বাধা। ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও তাকে উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য় অত্য়ন্ত প্রয়োজনীয়, কর্মসংস্থান ও উদ্য়োক্তাদের উৎসাহদান। আমি অধৈর্য। কেন, ২০৪৭ অবধি অপেক্ষা করতে হবে? কেন তার আগে হবে না?”
বাগযুদ্ধ তো চলবে, কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের হাল কি কোনওদিন কোনও সরকার শুধরাবে? সেটাই বড় প্রশ্ন।
(Feed Source: abplive.com)