মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার ছোট্ট গ্রাম আমদারা৷ এই গ্রামের হিন্দি মাধ্যমে স্কুলে পড়েই শৈশব কেটেছে সুরভি গৌতমের৷ দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর চূড়ান্ত পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফল করেন এই মেধাবী ছাত্রী৷ স্থান পান রাজ্যভিত্তিক মেধাতালিকায়৷ দুই পরীক্ষাতেই ১০০-এ ১০০ পান তিনি৷
শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে যুঝেই পড়াশোনা করতে হয়েছে সুরভিকে৷ দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় তিনি আক্রান্ত হন রিউম্যাটিক ফিভারে৷ চিকিৎসার জন্য গ্রাম থেকে ১৫০ কিমি দূরে জব্বলপুরে যেতে হত প্রতি ১৫ দিন পর৷ এত বাধাবিপত্তির পরও হাল ছাড়েননি তিনি৷ তিল তিল করে স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে গিয়েছেন সুরভি৷
দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার পর সুরভি উত্তীর্ণ হন স্টেট ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ট্রান্স পরীক্ষায়৷ ভোপালের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে৷ কলেজের দিনগুলিতে কিন্তু হীনন্মন্যতায় ভুগতে হত এই মেধাবিনীকেও৷ কারণ তিনি ইংরেজি বলতে সড়গড় ছিলেন না৷ সহপাঠীদের সঙ্গে ঝরঝরে ইংরেজিতে কথা বলতে গিয়ে হোঁচট খেতেন৷ প্রাথমিক পর্যায়ের সেই লজ্জা কাটিয়েই ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেন সুরভি৷
কিন্তু নিজের দুর্বলতাকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেননি চলার পথে৷ আটকে গেলেও তিনি অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলতে শুরু করেন৷ নিজের সঙ্গেই কথা বলে যেতেন তিনি৷ পাশাপাশি প্রতিদিন ১০ টা নতুন ইংরেজি শব্দ শিখতেন অর্থ-সহ৷
পরিশ্রমের ফলও পেলেন এই তরুণী৷ কাটিয়ে উঠলেন ইংরেজি বলার জড়তা৷ ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে চাকরি পান টিসিএস-এ৷ কিন্তু কর্পোরেট সংস্থায় চাকরি জীবন তিনি চাননি৷ তাই প্রস্তুতি নেন সিভিল সার্ভিসের৷
আইইএস পরীক্ষায় ২০১৩ সালে সফল হন সুরভি৷ স্থান পান সর্বভারতীয় মেধাতালিকায়৷ তিন বছর পর সুরভি লক্ষ্যভেদ করেন আইএএস পরীক্ষার৷ সর্বভারতীয় মেধাতালিকায় তাঁর স্থান হয় ৫০৷ আজ তিনি সফল আইএএস অফিসার৷ দক্ষ প্রশাসক মেয়েকে নিয়ে গর্বিত সুরভির আইনজীবী বাবা এবং শিক্ষিকা মা৷ সন্তানের সাফল্য সুরভিত করেছে তাঁদের জীবন৷