তবে ইসরায়েলে পৌঁছানোর আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার অনেক বন্ধুকে হারিয়েছেন। এটি আমেরিকার জন্য একটি বড় বিব্রতকর বিষয়। জো বাইডেন তার সফরের সময় উভয় পক্ষের সাথে বৈঠক করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। কিন্তু জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল-সিসি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করেছেন। এভাবে একজন সৎ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আমেরিকান প্রেসিডেন্টের প্রচেষ্টা এই মুহূর্তে সফল হয়নি।
হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, আমেরিকা ও ইসরাইল যুদ্ধের নিয়ম মেনে চলছে। যেখানে হামাস যুদ্ধের নিয়ম উপেক্ষা করে হামলা চালাচ্ছে। গাজার ত্রাণ শিবির ও হাসপাতালে হামলা যুদ্ধের নিয়মের পরিপন্থী।
আমেরিকার দুটি বড় উদ্বেগ?
প্রথম- ব্যাপক হারে মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আমেরিকা বিশ্বাস করে যে ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষা করার এবং হামাসকে আক্রমণ করার অধিকার রয়েছে, তবে এই সমস্ত কিছুর মধ্যেও তারা চায় ইসরায়েলও সাধারণ মানুষের জীবন সম্পর্কে চিন্তা করুক। তবে ইসরায়েলের দিক থেকে এটি ঘটছে বলে মনে হচ্ছে না।
দ্বিতীয়- এই যুদ্ধে ইরানকেও দক্ষিণ লেবাননে প্রক্সি সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে দেখা যায়। এ কারণে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। সাধারণ মানুষের মৃত্যু ও দুর্ভোগের চিত্র সামনে এলে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনও দুর্বল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা কি বলেন?
এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে এনডিটিভি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মতামত নিয়েছে। বেন গুরিওন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক খীভরাজ জাঙ্গিদ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বিডেনের সঙ্গে দেখা করতে তিনটি আরব দেশের প্রত্যাখ্যান অবশ্যই মর্মান্তিক। তবে আমি মনে করি না যে এটি বিডেনের মিশনে কোনো প্রভাব ফেলবে। আরব দেশগুলোর মধ্যে যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল। বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ হামলা কিছুটা ঠাণ্ডা হওয়ার পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।অন্তত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ক্লিন চিট দিয়েছে যে গাজার হাসপাতালে ইসরাইল হামলা করেনি। এই হামলার সঙ্গে অন্য কোনো পক্ষ জড়িত ছিল। ইসরায়েল এবং হামাস, তারপর এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে আল জাজিরা রয়েছে, যা গাজার একটি খুব বড় মিডিয়া নেটওয়ার্ক। বিবিসি নিউজেরও গাজায় একটি বড় নেটওয়ার্ক রয়েছে। এছাড়াও এই হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিবেদন নেই। এমন পরিস্থিতিতে আমি বিশ্বাস করি। যে তিনটি দেশ বিডেনের সাথে দেখা করতে অস্বীকার করেছিল, তা কেবলমাত্র একটি খারাপ সময়ের জন্য হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “যতদূর জো বিডেনের মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতির কথা, সব আরব দেশ এতে একত্রিত বলে মনে হচ্ছে। সে কারণেই এখন পর্যন্ত তারা অন্তত ইসরায়েলের এই হামলায় হামাসের সঙ্গে নেই।”
পশ্চিম এশিয়া বিশেষজ্ঞ কামার আগা এনডিটিভিকে বলেছেন, “এই পরিস্থিতি আমেরিকার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গাজার হাসপাতালে কারা হামলা করেছে তা পরে জানা যাবে। আরব জনগণ বিশ্বাস করে যে এর পেছনে রয়েছে ইসরাইল। ইসরায়েল নিয়ে সেখানে ক্ষোভের কারণেই এই বৈঠক। বাতিলও করা হয়েছে। এই সময়ে আরেকটি বড় সমস্যা এই দেশগুলোর সামনে। সাধারণ জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে। ব্যাপক আকারে বিক্ষোভ হচ্ছে। যেসব দেশ বিডেনের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করেছে তারাও বিক্ষোভের আশঙ্কা করছে। এখনও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলছে, পাছে তাদের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ শুরু হয়। সৌদি আরবও এই ভয়ে পিছু হটে।
(Feed Source: ndtv.com)