জ্যোতিপ্রিয়র আগেও রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের হেভিওয়েটদের বাড়িতে হানা, গ্রেফতারও অনেকে

জ্যোতিপ্রিয়র আগেও রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের হেভিওয়েটদের বাড়িতে হানা, গ্রেফতারও অনেকে
কলকাতা : রথীন ঘোষ, ফিরহাদ হাকিমের পর এবার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ২২ দিনের মধ্যে তৃতীয় কোনও মন্ত্রীর বাড়িতে হানা দিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সব মন্ত্রীর বাড়িতে যদি তল্লাশি চালায়, তাহলে সরকারের আর বাকি থাকল কী ? ইডি-র হানা নিয়ে তীব্র কটাক্ষের সুর শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Chief Minister Mamata Banerjee) গলায়। এদিকে, রাজ্য সরকার ও তৃণমূলকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিরোধীরাও।

তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা যখন পুজোর কার্নিভালের প্রস্তুতিতে, তখন আচমকাই সাত সকালে রাজ্য়ের হেভিওয়েটমন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে হানা দেয় ইডি ! সাত-সকালেই তাঁর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সকাল ৬ টা ১০-এ প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছে যান ED-র অফিসাররা। সল্টলেকের BC ব্লকে ২৪৪ ও ২৪৫, পাশাপাশি দুটি বাড়ি রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriyo Mullick)। দুটি বাড়িই ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। ED সূত্রে খবর, মন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। দ্বাদশীর ভোর থেকে মাঝরাত গড়িয়ে গেলেও জারি রয়েছে জেরা।

তবে এই প্রথম নয়। রোজভ্যালি কেলেঙ্কারি থেকে নারদকাণ্ড ও স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ড, এর আগে একাধিক মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল একাধিক হেভিওয়েট নেতার বাড়িতে হানা ও তাঁদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ২০১৭-র ৩ জানুয়ারি, রোজভ্যালিকাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল CBI।

২০২১-এ বিধানসভা ভোট মিটতেই ১৭ মে, নারদকাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার দুই হেভিওয়েট সদস্য সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিমকে গ্রেফতার করেছিল CBI। গ্রেফতার হয়েছিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রও। এরপর গত বছর, ২৩ জুলাই, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পর, তাঁকে গ্রেফতার করে ED। আর এবার একই পুর নিয়োগ দুর্নীতি ও রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে, এক মাসের মধ্যের রাজ্যের তিন মন্ত্রীর বাড়িতে হানা দিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি।

নিয়োগ বা রেশন বণ্টন, যেখানেই দুর্নীতিই হোক না কেন, মাথার উপর প্রভাবশালীর হাত না থাকলে কি, কারও পক্ষে এই বিপুল দুর্নীতি করা সম্ভব ? কিন্তু, সেই মাথারা কারা?
সেই উত্তর কি আদৌ পাওয়া যাবে কোনওদিন ? নাকি তদন্ত, জেরা, জিজ্ঞাসাবাদ ও রাজনৈতিক তরজাতেই বয়ে যাবে সময়। আর রাস্তায় বসে চোখের জল ফেলে যাবেন একাধিক দুর্নীতির ফাঁদে পড়া বঞ্চিতরা ! উত্তর দেবে সময়ই।